প্রিয়নবী সা. রহমতের দোয়া করেছেন যে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য
হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তির ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যে বেচা-কেনা করতে এবং পাওনা ফিরিয়ে নিতে ছাড় প্রদানের নীতি অবলম্বন করে।’ (সহিহ বুখারি, ইবনু মাজাহ, হাদিস, ২২০৩)
অর্থাৎ, আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন ব্যক্তির জন্য রহমতের দোয়া করেছেন, যে পাওনা ফিরিয়ে নেওয়া অর্থাৎ, ঋণ ফেরত আনার সময় ছাড় দেয়। এবং যখন বেচাকেনা করে তখন ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখে তার জন্য রহমতের দোয়া করেছেন তিনি। অর্থাৎ, বিক্রেতা কোনো কিছু বিক্রি করার সময় ক্রেতার সহজতার জন্য দামের ব্যাপারে কঠোরতা আরোপ করেন না; বরং মূল্য কমিয়ে দেন।
আরেক হাদিসে হজরত উসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ সে ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যে বেচাকেনায় সহজ ছিল।’ যখন সে নিজে ক্রয় করে, (অর্থাৎ নিজে ক্রয় করতে গেলে মূ্ল্যের ব্যাপারে দরকষাকষি করে না; বরং সহজ ও নরম ব্যবহার করে)। যখন পাওনা ফিরিয়ে নেয়, (অর্থাৎ, কারো কাছে ঋণের অর্থ পাওনা থাকলে তা আদায়ের ক্ষেত্রে নম্রতা ও সহজতা করে)। ফলে সে কঠোরতা না করে নম্র ও কোমলভাবে তা আদায় করে। ( ইবন মাজাহ ২২০২, সহীহুল জামে’ ২৪৩।
ইবন হিব্বানে জাবির রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাসিসে বলা হয়েছে, ‘যখন ঋণ শোধ করে তখন সহজ করে’। অর্থাৎ তার ওপর যদি ঋণ থাকে তাহলে তা পরিশোধ করার ব্যাপারে টালবাহনা করে না এবং অন্যের অধিকার আদায়ের বিষয়টি এড়িয়ে যায় না; বরং সহজভাবে ও পবিত্র অন্তর নিয়ে তা আদায় করে দেয়।
উপরে বর্ণিত চার ধরণের লোকদের জন্য নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রহমতের দোয়া করেছেন, যতক্ষণ তারা ক্রয়-বিক্রয় এবং ঋণ আদায় ও পরিশোধের সময় ছাড় প্রবণতা দেখাবে।
এই হাদিসের মাধ্যমে বোঝা যায়- বেচা-কেনার বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখা মুস্তাহাব। আর তা হলো, ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় একে অপরের কষ্টের ও বিরক্তের কারণ হয় এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া। নিজের পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে নম্রতার প্রতি উৎসাহ দেওয়া এবং পাওনা থেকে কিছু অংশ ছেড়ে দেওয়া।
এনটি