মুসা আ.-এর উম্মতকে যেভাবে উপদেশ দেওয়া হতো
আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য ১০৪টি আসমানী কিতাব নাজিল করেছেন। এরমধ্যে তাওরাত, জাবুর, ইঞ্জিল ও কোরআন শ্রেষ্ঠতম ও সবচেয়ে বড়। তাওরাত হজরত মুসা আলাইহিস সালাম-এর প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে।
মুসা আ.-কে কিতাব দান
ফেরাউন নীলনদে ডুবে ধ্বংস হওয়ার পর ৪০ দিন রোজা, ইতিকাফ ও ইবাদত বন্দেগী পালনের পর আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে এই কিতাব দান করেন।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আর আমি মুসা (আ.)-কে ৩০ রাত্রির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি (নির্ধারণ করেছি) এবং আরো ১০ (রাত্রি) দিয়ে তা পূর্ণ করেছি। এভাবে তার প্রতিপালকের নির্ধারিত সময় ৪০ রাত্রিতে পূর্ণ হয়। আর মুসা (আ.) তার ভাই হারুনকে বলল, 'আমার অনুপস্থিতিতে আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে তুমি আমার প্রতিনিধিত্ব করবে এবং তাদের সংশোধন করবে আর বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পথ অনুসরণ করবে না।' (সুরা আরাফ, আয়াত, ১৪২)
শিক্ষণীয় উপদেশ
হজরত মুসা আলাইহিস সালামের তাওরাত কিতাবে মানুষকে শিক্ষণীয় বিষয় সম্পর্কে উপদেশ দেওয়া হতো। এবিষয়ে হজরত আবু জর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের কিতাব সম্পর্কে জিগেস করলাম।
তিনি বললেন, এসব কিতাবে শিক্ষণীয় বিষয়ব্স্তু সম্পর্কে আলোচনা করা হতো। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, মুসা আলাইহিস সালামের কিতাবে বলা হয়েছে,
‘আমি এমন ব্যক্তির ব্যাপারে বিস্ময়বোধ করি, যে মৃত্যুর ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রাখে, কিন্তু এরপরও সে কিভাবে আনন্দবোধ করে। আমি এমন ব্যক্তির সম্পর্কে আশ্চর্যবোধ করি, যে বিধিলিপি বিশ্বাস করে এরপরও কিভাবে সে আপরক হতোদ্যম ও চিন্তামুক্ত হয়। আমি এমন ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি যে দুনিয়া, দুনিয়ার পরিবর্তন ও মানুষের উত্থান-পতন দেখে সে কিভাবে দুনিয়া নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকে। আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি যে পরকালের হিসাব নিকাশে বিশ্বাসী এরপরও সে কিভাবে আমল না করে বসে থাকে।
কোরআনে পূর্ববর্তী কিতাবের উপদেশ
হজরত আবু জর রা. বলেন, এরপর আমি জিগেস করলাম, পূর্ববর্তী নবীদের ওপর অবর্তীণ সহীফা ও কিতাবের কোনো বিষয়ব্স্তু আপনার ওপর অবতীর্ণ ওহীর মধ্যেও আছে কি? তিনি বললেন, হে আবু জর! সূরা আ’লার শেষ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করো-
قَدۡ اَفۡلَحَ مَنۡ تَزَکّٰی وَ ذَکَرَ اسۡمَ رَبِّهٖ فَصَلّٰی بَلۡ تُؤۡثِرُوۡنَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی اِنَّ هٰذَا لَفِی الصُّحُفِ الۡاُوۡلٰی صُحُفِ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ مُوۡسٰی
অর্থ :
অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে যে পরিশুদ্ধ হয়। আর তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও নামায কায়েম করে। কিন্তু তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দাও, অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্ট, ও স্থায়ী, নিশ্চয় এটা আছে পূর্ববর্তী সহীফাসমূহে। ইবরাহীম ও মূসার সহীফাসমূহে। (সূরা আলা, (৮৭), আয়াত ১৪-১৯, তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন, ৮ম খণ্ড, ৭৫৮)
এনটি