তথ্য ফাঁস করলে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন
ব্যক্তি, সমাজ জীবনে সবারই গোপনীয়তা থাকে। গোপনীয়তার বিষয়টি একান্ত ব্যক্তিগত। গোপনীয়তা ছাড়া কোনও মানুষই নেই বলতে গেলে। একান্ত আপনজনের কাছেও মানুষ অনেক কিছুই গোপন করে। আল্লাহ তায়ালাই মানুষকে এই অধিকার দিয়েছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
অন্য কারো ব্যক্তিগত গোপন বিষয় ও দোষ খোঁজা নিন্দনীয়। অকারণে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বিষয় নিয়ে গুপ্তচরের ভূমিকা পালন করা গুনাহ। অনুমতি ছাড়া কারো কথা শোনা এবং তথ্য ফাঁস করা এবং কারো বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করলে ভয়াবহ শাস্তি ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের কথা গুপ্তভাবে শুনল; অথচ সে তাদের কথাগুলো শুনুক তারা তা পছন্দ করছে না অথবা তারা তার অবস্থান টের পেয়ে তার থেকে দূরে পালিয়ে যাচ্ছে, কিয়ামতের দিন এ জন্য তার কানে সিসা ঢেলে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৭০৪২)
আরেকটি হাদিসে কথাটি আরো সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে, ‘হে লোকেরা, তোমরা যারা মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছ; অথচ ঈমান তোমাদের অন্তরে ঢোকেনি, তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দিয়ো না। তাদের দোষ অনুসন্ধান করো না। কারণ যে ব্যক্তি তার কোনো মুসলিম ভাইয়ের দোষ অনুসন্ধান করল, আল্লাহ তাআলা তার দোষ অনুসন্ধান করবেন। আর যার দোষ আল্লাহ তায়ালা অনুসন্ধান করবেন তাকে অবশ্যই তিনি লাঞ্ছিত করে ছাড়বেন, যদিও সে নিজ ঘরের অভ্যন্তরেই অবস্থান করুক না কেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩২)
মানুষের কল্যাণার্থে মানুষের দোষ-ত্রুটি এবং গোপন বিষয় প্রকাশ না করা অপরিহার্য। আল্লাহ তাআলা অন্যের দোষ-ত্রুটি গোপনকারীর দোষ গোপন করেন। তাকে উভয় জগতে পুরস্কৃত করেন। মানবতার নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন রাখে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯৪৫)
হজরত আলি (রা.) বর্ণনা করেন, ব্যতিব্যস্ত হয়ো না এবং কারো গোপন তথ্য ফাঁস করো না। কেননা তোমাদের পেছনে রয়েছে কেয়ামতের) ভীষণ কষ্টদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী বিপদসমূহ’ (আদাবুল মুফরাদ)। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন তোমার সঙ্গীর দোষ চর্চা করতে ইচ্ছা করে, তখন তোমার নিজের দোষ স্মরণ করো।’ (আদাবুল মুফরাদ)
এনটি