নবীজির রওজা জিয়ারত করবেন যেভাবে
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারত প্রত্যেক মুমিনের স্বপ্ন এবং একান্ত আকাঙ্খার বস্তু। নবীজির রওয়া জিয়ারতের বিশেষ ফজিলতও রয়েছে। এক হাদিসে হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে আমার ওফাতের পর আমার (রওজা) জিয়ারত করল, সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করল।’ (দারাকুতনি : ২৬৯৪)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ইরশাদ করেছেন যে আমার রওজা জিয়ারত করলো তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে গেলো। (মুসলিম) নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘যে হজ করলো কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করলো না ; সে আমার প্রতি জুলুম করলো।’ (তিরমিজি)
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘যে কেউ আমাকে সালাম দেয় তখনই আল্লাহতায়ালা আমার কাছে প্রেরণ করেন, অতঃপর আমি তার সালামের জবাব দেই।’ সুনানে আবু দাউদ : ২০৪১
তবে নবীজির রওজা জিয়ারতের নির্দিষ্ট কিছু শিষ্টাচার ও আদব রয়েছে। জিয়ারতপ্রত্যাশীদের উচিত এসবের প্রতি খেয়াল রাখা। এখানে কয়েকটি আদব তুলে ধরা হলো—
১. জিয়ারতকারী পবিত্র শরীরে পবিত্র কাপড় পরিধান করে যাবে।
২. জিয়ারতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর থেকেই বেশি বেশি দরুদ পাঠ করতে থাকবে। সে আল্লাহর কাছে দোয়া করবে যেন জিয়ারতের মাধ্যমে সে উপকৃত হয়।
৩. রওজায় প্রবেশের আগেই মন থেকে জাগতিক সব চিন্তাভাবনা দূর করে দেবে এবং তাঁর ভালোবাসায় অন্তর পূর্ণ করে নেবে।
৪. নবী (সা.)-এর প্রতি পূর্ণ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিয়ে রওজায় প্রবেশ করবে।
৫. সেখানে এমন কোনো আচরণ যেন প্রকাশ না পায়, যা নবী (সা.)-এর মর্যাদা পরিপন্থী।
৬. নবী (সা.)-কে অনুচ্চ আওয়াজে সালাম দেবে। কোনোভাবেই আওয়াজ উঁচু করবে না।
৭. রওজার দিকে ফিরে দাঁড়াবে, তবে সামান্য দূরত্ব বজায় রাখবে।
৮. অন্তরকে মহানবী (সা.)-এর চিন্তা ও ভালোবাসায় বিভোর করবে।
৯. যে কক্ষে নবী (সা.) শুয়ে আছেন, সেটি এবং তার মিম্বর ইত্যাদি স্পর্শ করা, তাতে চুমু খাওয়া ও তাওয়াফ করা থেকে বিরত থাকবে।
১০. আল্লাহর কাছে যেভাবে কোনো কিছু চাওয়া হয়, সেভাবে নবী (সা.)-এর কাছে চাইবে না। কোনো চাওয়ার থাকলে মহান আল্লাহর কাছেই চাইবে। দোয়া করার সময় কিবলামুখী হয়ে দোয়া করবে।
১১. রওজা শরিফে দীর্ঘ সময় অবস্থান করা, সেখানে ভিড় করে থাকা এবং ধাক্কাধাক্কি করা নবী (সা.)-এর মর্যাদা পরিপন্থী। যতক্ষণ অবস্থান করবে প্রশান্তির সঙ্গে অবস্থান করবে।
১২. ফেরার সময়ও দরুদ পাঠ করতে থাকবে।
১৩. সম্ভব হলে রিয়াজুল জান্নাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। (আল-ইজাহ ফি মানাসিকিল হাজ্জি ওয়াল ওমরাহ, পৃ. ৪৪৬-৪৫০।)
এনটি