ইফতারের যেসব মাসআলা জেনে রাখা উচিত
রোজাদার সূর্যাস্তের পর পানাহারের মাধ্যমে রোজা ভাঙে। তার এই পানাহারকে ইফতার বলা হয়। ইফতার রোজার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। ইফতারের সময় দোয়া কবুল করা হয়। ওই সময় বান্দার কোনো দোয়াই ফেরত দেওয়া হয়না বলে হাদিসে রয়েছে।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া প্রত্যাখ্যান করা হয় না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৫৩)
যেহেতু প্রতিটি রোজাদারকে ইফতার করতে হয়, তাই রোজার ইফতারের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে রাখলে রোজা পালন ও ইফতারের সুন্নত আদায় সহজ হয়। নিম্নে ঢাকা পোস্টের পাঠকদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা উল্লেখ করা হলো।
♦ সূর্যাস্ত হয়ে যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি ইফতার করা সুন্নত। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৩)
♦ খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা মুস্তাহাব। এরপর মিষ্টিজাতীয় কোনো কিছু খাওয়া এবং এরপর পানি দিয়ে। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৫)
♦ ইফতারের সময় নিম্নোক্ত দোয়া পড়া-
بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু।
♦ ইফতারের পর নিম্নোক্ত দোয়া পড়া-
«ذَهَبَ الظَّمَأُ، وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ»
উচ্চারণ : জাহাবাজ্-জামাউ, ওয়াব্ তাল্লাতিল উরুকু, ওয়া ছাবাতাল আজরু, ইনশাআল্লাহু তাআলা।
♦ বৃষ্টির দিনে কিছু দেরি করে ইফতার করা উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়াহ, খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ১০৮; মাসায়েল রমাজান, রাফয়াত কাছেমি : পৃষ্ঠা : ১৯৭)
♦ ইফতারের জন্য মাগরিবের নামাজ পাঁচ-ছয় মিনিট বিলম্বে আদায় করার অবকাশ রয়েছে। (রহিমিয়া : খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ৩৭)
♦ যদি সূর্যাস্তে সন্দেহ হয়, তাহলে ইফতার করা হালাল হবে না। (নাওয়াজিল : পৃষ্ঠা : ১৫২; শামি, খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৩৮৩)
♦ ‘লবণ দিয়ে ইফতার শুরু করা উত্তম’— এমন ধারণা করা ভুল। (আহকামে জিন্দেগি, পৃষ্ঠা : ২৪৭)
♦ পশ্চিম দিকে প্লেনে সফর করার কারণে যদি দিন বড় হয়ে যায়, তাহলে সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সূর্যাস্ত হলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইফতার বিলম্ব করতে হবে। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও সূর্যাস্ত না হলে ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ার সামান্য কিছু আগে ইফতার করে নেবে। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ৭০)
একজন মুসলমানের রমজান পালনের পূর্ণাঙ্গ একটি গাইডলাইন ‘যেভাবে কাটাবেন রমজান’। রমজানবিষয়ক প্রস্তুতির জন্য এবং সর্বোত্তমভাবে রমজান পালনে এই বইটি পাঠকের জন্য বেশ উপকারী। বইটি রচনা করেছেন আলেম ও সাংবাদিক মুফতি কাসেম শরীফ।