একাই কোরবানির নিয়তে পশু কেনার পর শরিক করা যাবে?
মুসলিমদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম একটি হলো কোরবানি। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানির গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন কোরআন কারিমে এরশাদ করেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি যাতে তারা হালাল পশু জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সূরা হজ : ৩৪)
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে আরো বলেছেন, ‘নিশ্চই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই পৌঁছে না, তবে আমার কাছে পৌঁছে শুধু তোমাদের তাকওয়া।’ (সূরা হজ : ৩৭)
কোরবানিতে শরিক
কোরবানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো- এতে অন্যকে শরিক করা বা কয়েকজন মিলে কোরবানি করা। গরু, মহিষ ও উট—এই তিন প্রকার পশুর একেকটিতে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি পর্যন্ত শরিক হয়ে কোরবানি করা যায়। শরিকদের সংখ্যা জোড় হোক বা বেজোড় তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে কোরবানির জন্য শর্ত হলো কারো অংশ যেন এক-সপ্তমাংশের চেয়ে কম না হয়। প্রত্যেক শরিককেই কোরবানি অথবা আকিকার মতো কোনো ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভের নিয়ত করতে হবে।
যদি শরিকদের একজনও গোশত খাওয়ার নিয়ত করে তবে কারো নিয়ত দুরস্ত হবে না। অনুরূপভাবে যদি কোনো শরিকের অংশ সপ্তমাংশের কম হয় তবে সবার কোরবানিই নষ্ট হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩০৪)
কোরবানির পশুতে অংশীদার
যদি গরু কেনার আগে অংশীদাররা সবাই মিলে কেনে তবে তা জায়েজ। আর যদি কেউ একা কোরবানি করার জন্য একটা গরু কেনে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে পরে আরো লোককে অংশীদার করবে তবে তা-ও জায়েজ আছে।
তবে কেউ যদি পুরা গরু একাই কোরবানি করার নিয়তে ক্রয় করে, তাহলে পরবর্তীতে তাতে অন্যদের শরিক করা মাকরূহ। এরপরও অন্যদের শরিক করে নিলে কোরবানি আদায় হয়ে যাবে। তবে ফকীহ অলেমরা বলেন, এক্ষেত্রে পশু ক্রেতার জন্য উচিত হবে, শরিকদের থেকে প্রাপ্ত টাকা সদকা করে দেওয়া।
কোরবানির পশু ক্রয়ের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় হলো- যদি পশু ক্রয়কারী ব্যক্তি এমন হয়, যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় এবং তিনি কেনার সময়ও অন্যদের শরিক করার নিয়ত করেননি তবে অন্য কাউকে নতুন করে অংশীদার করা যাবে না। এককভাবে কোরবানি করতে হবে। —(কিতাবুল আছল ৫/৪০৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৫; খিযানাতুল আকমাল ৩/৫৩৭; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৭, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ৫/৩০৪)
এনটি