তালবিয়া পড়ার ফজিলত
তালবিয়াকে হজ-ওমরার শ্লোগান বলা হয়। কেননা তালবিয়া পাঠের মধ্য দিয়ে হজ ও ওমরায় প্রবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। যায়েদ ইবন খালিদ জুহানী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জিবরীল আমার কাছে আসলেন অতপর বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন আপনি আপনার সাথীদেরকে নির্দেশ প্রদান করেন যে, তারা যেন উঁচু স্বরে তালবিয়া পাঠ করে। কারণ এটি হজের শ্লোগানভুক্ত।’(তাবরানী, হাদিস, ৫১৭২)
এজন্য হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য ইহরামের পর প্রথম কাজ হলো তালবিয়া পাঠ করা। প্রথমবার তালবিয়া পড়া আবশ্যক। এরপর থেকে তালবিয়া পড়া সুন্নত। ইহরাম বাঁধার পর তালবিয়া পড়া আবশ্যক হলেও এরপর থেকে হজের সবগুলো রোকন আদায়ের সময় অর্থাৎ আরাফাতের ময়দান, মিনা-মুজদালিফায় অবস্থানের সময় হাজিরা তালবিয়া পাঠ করে থাকেন।
এ তালবিয়ার শব্দগুলোকে (নারীরা স্বশব্দে পুরুষরা উচ্চস্বরে) ৪ ভাগে ৩ বার পাঠ করবে-
لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ - لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ - اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ - لاَ شَرِيْكَ لَكَ
তালবিয়ার উচ্চারণ :
‘লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্ক, লা শারিকা লাক।’
অর্থ : আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমি আাপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আপনার কোন শরীক নেই, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নে‘মত এবং সাম্রাজ্য আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৫৪৯; মুসলিম, হাদিস : ২৮১১)
তালবিয়া পাঠের ফজিলত
তালবিয়া পাঠ হজ-ওমরার শোভা বৃদ্ধি করে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘অমুকের ওপর আল্লাহর অভিশাপ! তারা ইচ্ছা করে হজের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনের শোভা মিটিয়ে দিল। আর নিশ্চয় হজের শোভা হল তালবিয়া।’ -(মুসনাদ আহমদ, ১/২১৭)
হজরত সাহল ইবনে সাদ আস-সায়েদি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন কোনো ব্যক্তি যখন তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ডানে ও বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যা কিছু আছে; যেমন- গাছপালা, মাটি, পাথর সব কিছু (তালবিয়া পাঠকারীর সঙ্গে সঙ্গে) তালবিয়া পড়তে থাকে। এমনিভাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত গিয়ে তা (পড়া) শেষ হয়।’ (তিরমিজি, ১৬৫৬ ইবনে মাজাহ)
হজরত আবু বরক ছিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন ধরণের হজ সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘আলআজ্জু, ওয়াছছাজ্জু’। অর্থাৎ উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ এবং কুরবানি করা।’ (তিরমিজি : ২৯২৪)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে কেউ তালবিয়া পাঠ করবে তাকে সুসংবাদ দেয়া হবে। আর যে কেউ তাকবির বলবে তাকে সুসংবাদ দেয়া হবে। (সুসংবাদ সম্পর্কে) জানতে চাওয়া হলো- ইয়া রাসুলাল্লাহ! জান্নাতের সুসংবাদ? উত্তরে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ’। (তাবারানি, তারগিব)
এনটি