যেসব কারণে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ
রোজা মুসলমানদের ওপর ফরজ। হিজরতের দেড় বছর পর ফরজ করা হয়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
রমজানের রোজা ফরজে আইন। শরিয়ত সমর্থিত কারণ ছাড়া ছেড়ে দেওয়া কবিরা গুনাহ। আর যে তা অস্বীকার করবে, সে কাফির। বিনা ওজরে রোজা না রাখলে ফাসিক ও কঠিন গুনাহগার হতে হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩-১৮৪; ফাতওয়া তাতারখানিয়া, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৫০)
তবে বিভিন্ন কারণে রোজা ভাঙার অনুমতি দিয়েছে শরিয়ত। কী কী কারণে বা কোন ব্যক্তির রোজা না রাখা কিংবা ভাঙা জায়েজ তা নিয়ে ঢাকা পোস্টের পাঠকদের জন্য সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
♦ যে ব্যক্তি এমন দুর্বল হয়ে যায় যে, রোজা রাখার শক্তিই নেই। (আপকে মাসায়েল : খণ্ড. ৩, পৃষ্ঠা : ২০৩)
♦ এমন ক্ষুধা বা পিপাসা লাগে যে প্রাণ চলে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। (আলমগিরি : খণ্ড. ১, পৃষ্ঠা : ২০৭)
♦ যদি এমন অসুস্থ হয়ে পড়ে যে রোজা রাখার শক্তি নেই বা রোজা রাখার দ্বারা অসুস্থতা বেড়ে যাবে, তাহলে তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। তবে হ্যাঁ, যখনই সুস্থ হয়ে যাবে, তখনই তার ওপর রোজা কাজা করে নেওয়া ওয়াজিব। (আপকে মাসায়েল : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ২০২)
♦ কেউ যদি রোজা থাকার কারণে জীবনযাপনের উপকরণ উপার্জন করতে দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে তার জন্য রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি রয়েছে। তবে তা পরে কাজা করে নিতে হবে। তা-ও সম্ভব না হলে ফিদিয়া আদায় করবে এবং প্রতি রোজার পরিবর্তে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ দান করে ফিদিয়া আদায় করবে। (শামি : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৪০০)
♦ গর্ভধারিণী বা স্তন্যদানকারিণী মহিলা যদি নিজের অথবা নিজের বাচ্চার প্রাণপাতের আশঙ্কা করেন, তাহলে তাঁর জন্য রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ আছে। (আলমগিরি : খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ২০৭)
♦ অনুরূপভাবে ফসল কর্তন করার ক্ষেত্রে। যদি রোজা থাকা অবস্থায় ফসল কর্তন করা সম্ভব না হয়। অন্যদিকে দেরি হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে রোজা না রাখার অনুমতি আছে এবং অন্য সময় কাজা করে নেবে। (শামি : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৪০০)
একজন মুসলমানের রমজান পালনের পূর্ণাঙ্গ একটি গাইডলাইন ‘যেভাবে কাটাবেন রমজান’। রমজানবিষয়ক প্রস্তুতির জন্য এবং সর্বোত্তমভাবে রমজান পালনে এই বইটি পাঠকের জন্য বেশ উপকারী। বইটি রচনা করেছেন আলেম ও সাংবাদিক মুফতি কাসেম শরীফ।