শুধু মক্কায় যাওয়ার খরচ থাকলে হজ ফরজ হবে?
‘হজ’ অর্থ কোনো মহৎ কাজের ইচ্ছা করা। হজের নিয়তসহ ইহরাম ধারণ করে নির্দিষ্ট দিনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ও কাবা শরিফ তাওয়াফ করাকে হজ বলে। (ফাতাওয়া শামি : ২/৪৫৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়।’ (বুখারি : ১/২০৬)
হজের নির্দিষ্ট সময়—শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজের প্রথম ১০ দিন। বিশেষত ৮ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পাঁচ দিন। এ পাঁচ দিনই মূলত হজ পালন করা হয়। হজের নির্ধারিত স্থান—কাবা শরিফ, সাফা-মারওয়া, মিনা, আরাফা ও মুজদালিফা। (আসান ফিকাহ : ২/২৫১)
কারো কাছে মক্কায় আসা-যাওয়া পরিমাণ খরচ থাকলে তার ওপর হজ ফরজ হয়। সুতরাং স্থাবর সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রয় করে কেউ যদি হজ আদায় করতে সক্ষম হয় এবং হজ থেকে ফিরে এসে বাকি সম্পত্তি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫২; আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৬)
কারো কাছে যদি শুধু মক্কায় যাওয়া-আসার পরিমাণ টাকা থাকে কিন্তু মদীনায় যাওয়া-আসার মতো অর্থ না থাকে তাহলে এমন ব্যক্তির ওপরও হজ করা ফরজ হবে। কারণ হজের সম্পর্ক মূলত মক্কার সঙ্গে। হজে পালনীয় ফরজ-ওয়াজিব সবগুলো আমলের সম্পর্ক মক্কার সঙ্গে। মদিনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক সাথে নেই।
মদীনায় যাওয়া হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসা ও তার রওজা জিয়ারতের কারণে। এক হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে আমার রওজা জিয়ারত করলো তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে গেলো। (মুসলিম)
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘যে হজ করলো কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করলো না ; সে আমার প্রতি জুলুম করলো।’ (তিরমিজি)
তাই হজে গিয়ে মদিনায় নবীজির রওজা জিয়ারত করা হয় প্রিয় নবীর ভালোবাসার কারণে, হজের কোন বিধান পালনের জন্য নয়। তাই মদীনায় যাওয়ার খরচ না থাকলেও মক্কায় যাওয়ার খরচ থাকলেই হজ ফরজ হয়ে যাবে।