তাহাজ্জুদ নামাজ জামাতে পড়া যাবে?
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ, জুমা ও দুই ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করা ইসলামের শিআর (নিদর্শন)। এছাড়া তারাবি, রমজানে বিতর, ইস্তিসকা ও সূর্যগ্রহণের নামাজ জামাতে আদায় করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ও সুন্নত।
কিন্তু তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামাজ শরীয়তের দৃষ্টিতে একাকী ও ঘরে আদায় করার মতো নামাজ। যে কারণে এগুলোতে আজান-ইকামত এবং জামাতের আয়োজনের বিধান নেই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কেরামের সাধারণ আমল এমনই ছিল। তারা তাহাজ্জুদ ও নফল ঘরে একাকী আদায় করতেন।
হাদীস ও সীরাতের বর্ণনানুযায়ী নবী-যুগে একটি অথবা দুটি ঘটনাই এমন পাওয়া যায় যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের নামাজ শুরু করার পর, কোনো সাহাবী এসে তার পেছনে নিয়ত করেছেন। এ জাতীয় এক দুটি ঘটনা ছাড়া, (জামাত যেখানে ঘটনাচক্রে হয়ে গিয়েছিল।) তাহাজ্জুদের জামাতের অন্য কোনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না।
তাই ফিকহে হানাফীর ফাতাওয়া হল, তাহাজ্জুদের নামাজ রোজার মাসে পড়া হোক কিংবা অন্য মাসে, একাকী পড়া উচিত। জামাতের সাথে তাহাজ্জুদ পড়া ঠিক নয়। তবে কেউ যদি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া কোনো ব্যক্তির ইক্তিদা করে ফেলে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু এটাকে নিয়ম বানিয়ে ফেলা সুন্নত পরিপন্থী কাজ।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন হাদিসেও নফল নামাজ জামাত ছাড়া একাকী ঘরে পড়ার কথা বলা হয়েছে। এক হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবন উমর রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামাজ আদায় কর, ঘরকে কবর বানিও না।’-(সহীহ মুসলিম ১/২৬৫)
অপর এক হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সাদ রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘরে নামাজ পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমার ঘর মসজিদের কত নিকটে তারপরও আমি ঘরে নামাজ পড়তে ভালবাসি। তবে ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ি।’ (শামায়েলে তিরমিজি, ২০)