রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে কতটা প্রিয়
রমজান মাসের রোজা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী পুরুষের জন্য ফরজ। হজরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, এলোমেলো চুলসহ একজন গ্রাম্য আরব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এলেন। এবং জিগেস করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাকে বলুন, আল্লাহ্ তায়া আমার উপর কত সালাত ফরজ করেছেন? তিনি বললেন, পাঁচ (ওয়াক্ত) সালাত; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তা স্বতন্ত্র কথা।
এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ্ তায়ালা আমার উপর কত সিয়াম ফরজ করেছেন? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, রমজান মাসের সওম (রোজা); তবে তুমি যদি কিছু নফল সিয়াম আদায় কর তা হল স্বতন্ত্র কথা।
এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার উপর কী পরিমাণ জাকাত ফরজ করেছেন? রাবী বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন।
এরপর তিনি বললেন, ওই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার উপর যা ফরজ করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল। (বুখারি, ১৮৯১)
রোজা এবং রোজাদারের অনেক ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে হাদিসে। এরমধ্যে অন্যতম হলো আল্লাহ তায়ালা নিজেই এর প্রতিদান দেবেন। রোজাদের জন্য আরেকটি প্রাপ্তি হলো আল্লাহ তায়ালার কাছে রোজাদারের মুখের গন্ধ অনেক প্রিয়। এ বিষয়ে হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ বলেন, ’আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু রোজা স্বতন্ত্র, তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।’ রোজা ঢাল স্বরূপ অতএব তোমাদের কেউ যেন রোজার দিনে অশ্লীল না বলে এবং হৈ-হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, ’আমি রোজা রেখেছি।’
সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে, নিঃসন্দেহে রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা বেশী উৎকৃষ্ট। রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে, তখন সে আনন্দিত হয়; যখন সে ইফতার করে (ইফতারের জন্য সে আনন্দিত হয়)। আর যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, স্বীয় রোজার জন্য সে আনন্দিত হবে।’ (বুখারী ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১, তিরমিজি, ৭৬৪, ৭৬৬, নাসায়ী, ২২১৫, আবু দাউদ ২৩৬৩, ইবনু মাজাহ ১৬৩৮)
এনটি