রোজা শুদ্ধ হতে নিয়ত করবেন যেভাবে
প্রতিটি কাজের শুরুতে নিয়ত শুদ্ধ করা জরুরি। কারণ, নিয়ত হলো- আমলের প্রাণ। আর ইবাদতের প্রাণ হলো ইখলাস। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনো কাজ করাকে ইখলাস বলা হয়। আর ইবাদতে ইখলাস আসে বিশুদ্ধ নিয়তের মাধ্যমে।
নিয়ত মানে সংকল্প। এটি মনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়। নিয়ত করতে কোনো ধরনের কষ্ট-ক্লেশ নেই। নেই বিশেষ কোনো আয়োজনের নিয়ম। নিয়তের গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন—
নিশ্চয়ই সব আমলের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেক ব্যক্তি (প্রতিদান হিসেবে) তাই পাবে, যা সে (কাজের ক্ষেত্রে) নিয়ত করেছে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টির উদ্দেশে হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও রাসুলের জন্যই হবে। আর যে বৈষয়িক উন্নতি কিংবা কোনো নারীকে বিয়ের উদ্দেশে হিজরত করবে, তার হিজরত ওই বিষয়ের জন্যই হবে।
(বুখারি শরিফ, হাদিস : ০১)
মুমিনের সব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আর এই সংকল্প হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। নিয়তের বিশুদ্ধতার কারণে মুমিনের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়— সব কাজ নেকির কাজে পরিণত করতে পারে।
আমলের সওয়াব নির্ভর করে নিয়তের ওপর
উত্তম নিয়তের কারণে আমলের সওয়াব পাওয়া যায়। আর নিয়ত বিশুদ্ধ না হলে আমলও নষ্ট হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সওয়াব পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে না। তাই রোজা কবুল হওয়ার জন্যও বিশুদ্ধ নিয়ত জরুরি।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ মনে শহীদি মৃত্যু প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে শহীদের মর্যাদা দান করেন, যদিও সে নিজ বিছানায় মৃত্যুবরণ করে।’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ১৯০৯)
মুখে নিয়ত না করলে রোজা হবে?
অনেকে প্রশ্ন করেন যে, বেশির ভাগ রোজায়ই মুখে নিয়ত উচ্চারণ করি না; বরং রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সাহিরর জন্য উঠে সাহির খেয়ে নিই এবং অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগি যথাযথ করতে থাকি। এমনটি করলে আমাদের রোজাগুলো শুদ্ধ হবে?
এই ক্ষেত্রে রোজা রাখার উদ্দেশ্যে ঘুম থেকে ওঠা ও সাহরি খাওয়াটাই রোজার নিয়তের শামিল। নিয়ত মনের ইচ্ছার নাম, এ ক্ষেত্রে মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। তাই আপনার রোজাগুলো আদায় হয়ে গেছে। (সূত্র : আল-বাহরুর রায়েক : ২/৪৫২; আল-জাওহারুতুন নাইয়্যিরাহ : ১/১৭৬; রদ্দুল মুহতার : ৩/৩৩৯, ৩৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৯৫)