মসজিদে বসে ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা বলা যাবে?
রাসুল (সা.) মসজিদকে পৃথিবীর সর্বোত্তম স্থান বলেছেন। মসজিদ নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করে দেবেন।’ -(বুখারি, হাদিস : ৪৫০)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ নির্মাণ করতে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং সুবাসিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। -(তিরমিজি, হাদিস : ৫৯৪)
মসজিদ ইবাদতের জায়গা। এখানে দুনিয়াবি কথা বলা নিষেধ। কিন্তু কেউ যদি মসজিদে বসে ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা বলেন তাহলে এর কারণে গুনাহ হবে কিনা অথবা এর বিধান কী- এ বিষয়ে জানতে চান অনেকে। যেমন একজন জানতে চেয়েছেন-
ক্রয়-বিক্রি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের আলোচনা কি দুনিয়াবি কথাবার্তার অন্তর্ভুক্ত? মসজিদে বসে সরাসরি বা মোবাইল ফোনে ক্রয়-বিক্রি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের আলোচনা করা বৈধ হবে কি না? কেউ কেউ বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। তাই ইতিকাফকারী ছাড়াও অন্যদের জন্য এর আলোচনা মসজিদে করতে কোনো অসুবিধা নেই। তাদের এ কথা কতটুকু সঠিক? আসলে কি ইতিকাফকারী ব্যতীত অন্য কেউ ক্রয়-বিক্রি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের আলোচনা মসজিদে করতে পারবে?
এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে আলেমরা বলে থাকেন, মসজিদ আল্লাহ তায়ালার ঘর। ইবাদতের স্থান। এখানে ইবাদতপরিপন্থি কোনো কাজ করার অনুমতি নেই। হালাল উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য সওয়াবের কাজ। তবে সব সওয়াবের কাজের স্থান মসজিদ নয়। তাই কারও জন্য মসজিদে ক্রয়-বিক্রি করার অনুমতি নেই। পণ্য সরাসরি মসজিদে নিয়ে এলে এর খারাপ দিক আরও বেশি। অবশ্য ইতিকাফকারীর প্রয়োজনীয় কেনাকাটার কেউ না থাকলে পণ্য উপস্থিত না করার শর্তে এবং অন্য কারও ক্ষতি না করে অতীব প্রয়োজনীয় কেনাকাটা বা তার আলাপ-আলোচনার অনুমতি রয়েছে। (বাদায়েউস সানায়ে : ২/২৮৭; ফাতহুল কাদির : ২/৩১২; আদ্দুররুল মুখতার : ২/৪৪৮)
এছাড়াও আলেমরা বলেন, মসজিদে কোনওভাবেই দুনিয়াবি কাজ-কর্ম, কথা বার্তা বলা উচিত নয়। হাদীসে এ বিষয়ে কঠিন ধমকি এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কাউকে মসজিদে বেচা-কেনা করতে দেখলে বল, তোমার বেচা-কেনা লাভজনক না হোক। তেমনিভাবে কাউকে যদি মসজিদে হারানো বস্তুর এলান করতে দেখ তাহলে বল, আল্লাহ তোমার হারানো বস্তু ফিরিয়ে না দিন। -(অর্থাৎ এ কাজটি খুবই নিন্দনীয়)। -(জামে তিরমিজি, ১৩৩৬; সহীহ ইবনে খুযাইমা, ১৩০৫)
প্রশ্নটি করেছেন, মুহাম্মাদ জাবেদ হুসাইন নারায়ণগঞ্জ থেকে।
জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন ও বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
এনটি