প্রাণীর ছবি টানানো ঘরে নামাজ হবে?
পৃথিবীর জীবন শেষে পরকালে চিরস্থায়ী শান্তি অথবা শাস্তি নির্ধারিত হবে কেয়ামতের ময়দানে। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর হিসাব নেবেন। এতে কারও প্রতি বিন্দুমাত্র অন্যায় করা হবে না। সবাইকে তার আমল অনুযায়ী জান্নাত-জাহান্নামে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর কারও আর সুযোগ থাকবে না নিজের ভাগ্য ও আবাস্থল পরিবর্তনের।
কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা মানুষের আমল, ভালো-মন্দের হিসাব শুরু করবেন নামাজের মাধ্যমে। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন বান্দার যে কাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে তা হচ্ছে নামাজ। সুতরাং যদি তা সঠিক হয়, তাহলে সে পরিত্রাণ পাবে। আর যদি (নামাজ) খারাপ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।-(আবু দাউদ ৮৬৪, তিরমিজি ৪১৩, ইবনে মাজাহ ১৪২৫)
সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের জন্য শরীয়তে নির্ধারিত বিধানগুলো এবং নামাজ ভঙ্গের কারণগুলো মেনে চলা জরুরি। অন্যথায় আল্লাহর তায়ালার দরবারে নামাজ কবুল হবে না। অনেকে জানতে চান- কোনও ঘরে মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর ছবি টাঙানো থাকলে সে ঘরে নামাজ পড়া যাবে কিনা?
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, যে ঘরে কোনো প্রাণীর ছবি দৃশ্যমান থাকে তাতে নামাজ পড়া মাকরুহ। অবশ্য নামাজের সময় ছবি ঢাকা থাকলে নামাজ মাকরুহ হবে না। আর এ কথা মনে রাখা দরকার যে, ঘরে-বাইরে কোনো প্রাণীর ছবি টাঙিয়ে রাখা কিংবা প্রদর্শনী হয় এভাবে খোলা রাখা নাজায়েজ। এ কারণে ওই স্থানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।
রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ফেরেশতারা এমন ঘরে প্রবেশ করে না, যাতে কোনো কুকুর রয়েছে এবং এমন ঘরেও না, যাতে কোনো প্রাণীর ছবি রয়েছে’ (বুখারি : ৩৩২২; মুসলিম : ২১০৬)।
তাই কর্তব্য হলো, মানুষ বা জীবজন্তুর যত ছবি ঘরে টাঙানো আছে তা নামিয়ে ফেলা এবং তা নষ্ট করে ফেলা। মনে রাখতে হবে, বিনা প্রয়োজনে ছবি ওঠানো নাজায়েজ। হাদিস শরিফে ছবি ওঠানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ও কঠোর ধমক দেওয়া হয়েছে। (ফাতহুল কাদির : ১/৩৬২; আলবাহরুর রায়েক : ২/২৭; রদ্দুল মুহতার : ১/৬৪৮)
এনটি