মৃত ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার সময় যে দোয়া পড়বেন
পৃথিবীতে কেউ স্থায়ী নয়। প্রতিটি মানুষ নির্ধারিত সময়ে স্বল্পক্ষণের দুনিয়াকে বিদায় জানায়। কারণ, মানুষের জন্ম হওয়া মানেই মৃত্যু অবধারিত। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কেয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তারপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আল ইমরান, আয়াত : ১৮৫)
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান করো, তবুও।’ (সুরা আন নিসা, আয়াত : ৭৮)
কারো মৃত্যু হলে তার জানাজা ও দাফন দেওয়া জীবিতদের উপর ফরজে কিফায়া। মৃতের জানাজার নামাজ ও দাফন-কাফনে অংশ নেওয়ার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনও মুসলমানের জানাজায় শরিক হয়ে নামাজ পড়ে এবং তাকে কবরও দেয় সে দুই কিরাত নেকি পাবে। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাজার নামাজ পড়ে কিন্তু মাটি দেয় না, সে এক কিরাত নেকি পাবে। সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, দুই কিরাতের পরিমাণ কতটুকু? তিনি বললেন, প্রত্যেক কিরাত উহুদ পাহাড় সমান নেকি।’-(বুখারি : ৪৭; মুসলিম : ৯৪৫; তিরমিজি : ১০৪০; নাসায়ি : ১৯৯৪; আবু দাউদ : ৩১৬৮; ইবনে মাজাহ : ১৫৩৯)
মৃতকে দাফনের জন্য কবরের দৈর্ঘ্য মৃতের উচ্চতার সমান করে করতে হয়। গভীরতা মৃতের অর্ধেক আর প্রস্থ হতে হয় দুই হাত। মৃতকে কবরে নামানোর আগে কবরের কিবলার দিকে (পশ্চিম পাশে) রাখতে হয়। আর মাথা উত্তর দিকে ও পা দক্ষিণ দিকে রাখতে হয়। কবরেও ঠিক একই নিয়ম।
মাথার দিক থেকে কবর ভরাট করা মুস্তাহাব। দুই হাতে কবরে মাটি-বালি রাখা উত্তম। মৃত ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার সময় কোরআন কারীমের একটি আয়াত পড়ার কথা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
হাদিস শরিফে এসেছে,হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূল (সা.) এর কন্যা উম্মে কুলসুমকে কবরে রাখা হয় তখন রাসূল (সা.) বললেন,
مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى . بِسْمِ اللَّهِ وَفِى سَبِيلِ اللَّهِ وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللَّ
কোনও ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার সময় এটা বলার নিয়ম হলো, প্রথমবার মাটি দেওয়ার সময় ‘মিনহা খালাকনাকুম’ বলতে হয়। দ্বিতীয়বার ‘ওয়া ফিহা নুঈদুকুম’ বলতে হয়। আর তৃতীয়বার বলতে হয়— ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা’। -(সুনানে বায়হাকী, হাদিস: ৬৯৭৩, রদ্দুল মুহতার : ৩/১৪৩, ১৫৪)
এনটি