পাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা জরুরি যে কারণে
রোগব্যাধির কারণে শরীরের অঙ্গসমূহ পার্থিব জগতে মানুষের দেহকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলে। তাই প্রতি মুহুর্তে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে রোগব্যাধি থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা থাকে সবার। রোগব্যাধির থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হলো দেহের অঙ্গগুলোকে পাপাচার থেকে মুক্ত রাখা। কারণ পরকালে এই অঙ্গগুলোই দেহের সকল অপকর্মের কথা প্রকাশ করে মানুষকে জাহান্নামে ঠেলে দেবে। এজন্য সব ধরনের অপকর্ম ও পাপাচার থেকে মুক্ত থাকা অপরিহার্য।
অঙ্গ বিচারের মুখোমুখি হবে
আল্লাহ তায়ালা বিচার দিবসে দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গকে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয়ই কান চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। -(সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত, ৩৬)
বিচার দিবসে কানকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবন কি কি শুনেছো? চোখকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবন কি কি দেখেছো? অন্তঃকরণকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবনে কি কি কল্পনা করেছ?
যদি কান দিয়ে কারো গীবত ও হারাম গান বাদ্য শুনে থাকে; অথবা চোখ দিয়ে এমন কিছু দেখে থাকে; যা শরীয়ত অনুমোদন করে না, অথবা অন্তরে কোরআন সুন্নাহ পরিপন্থী বিশ্বাস লালন করে থাকে; তবে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে।
অপকর্মের সাক্ষী
বিচার দিবসে হিসাব-নিকাশের জন্য উপস্থিতির সময় প্রথমে সবাইকে যা ইচ্ছে বলার স্বাধীনতা দেওয়া হবে। পাপীরা তাদের অপকর্মের কথা অস্বীকার করার পর আল্লাহ তায়ালা তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর হাত-পা ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে রাজসাক্ষী করে কথা বলার যোগ্যতা দেওয়া হবে। তারা পাপীদের সব অপকর্মের সাক্ষ্য দেবে ।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবো, তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ -(সুরা ইয়াসিন, আয়াত, ৬৫)
হজরত হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকে বলেছেন, তুমি তোমার জাতিকে ভয় প্রদর্শন করো, যেন তারা সুস্থ অন্তঃকরণ, সত্যবাদী জবান, পরিচ্ছন্ন হস্ত ও পবিত্র যৌনাঙ্গ ছাড়া আমার কোন মসজিদে প্রবেশ না করে। নিজেদের কাছে জুলুমের বদগুণ নিয়ে আমার কোন মসজিদে না আসে।
যদি আসে, তবে আমার সামনে যতক্ষণ থাকে আমি অভিসম্পাত করতে থাকি, যতক্ষণ না পাপাচার ও জুলুম পরিত্যাগ করে। জুলুম ও পাপাচার পরিত্যাগ করলে, ...সে আমার বন্ধু হয়ে যায়। সে জান্নাতে নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও নেক্কারদের সাথে বসবাস করবে। -( কুরতুবি,১/ ৮৮)
আল্লাহ তায়ালার অপার নেয়ামত
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, আমি কি তাকে চক্ষুদ্বয়, জিহ্বা, ওষ্ঠদয় দান করিনি? -(সূরা বালাদ, ৮-৯)
আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন দৃষ্টি নত রাখে। এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে ,এতে রয়েছে তাদের জন্য পবিত্রতা। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা অবগত আছেন। আর ঈমানদার নারীদেরকে বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে, এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তারা যেন তাদের সাধারণত দৃশ্যমান অঙ্গ ছাড়া অপরাপর অঙ্গের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে ,এবং তাদের বক্ষদেশে মাথার ওড়না ফেলে রাখে।-(সূরা নূর, আয়াত, ৩১)
এনটি