অনর্থক কথা বর্জন জরুরি যে কারণে
মানুষ সারাদিন যত কাজ করে এর সবগুলোই কল্যাণকর ও যৌক্তিক হয় না। অনেক কিছুই থাকে অনর্থক, যার কোনও অর্থই থাকে না। তবে প্রতিটা কাজের ফলাফল নিয়ে ভাবেন না সবাই, ইচ্ছে-খুশি বলে যান, করে যান কোনও চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই। কিন্তু কখনো কখনো শুধু অসতর্ক কথা-কাজই মানুষের লেজে-গোবরে অবস্থা করে দেয়। অনেক সময় পড়তে হয় বড় বিপদে।
একারণেই উদ্দেশ্যহীন ও অনর্থক আচরণ-উচ্চারণ পরিহার করা ঈমানের দাবি ও ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। এটি সফলকাম মুমিনের অনন্য বৈশিষ্ট্য এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের স্বভাব-চরিত্র।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘অর্থহীন কথাবার্তা ও কাজকর্ম থেকে নিজের আঁচল বাঁচিয়ে চলা ইসলামের অন্যতম শোভা ও সৌন্দর্য।’ -(সুনানে তিরমিজি : হাদিস ২৩১৭)
আল্লাহ তায়ালা প্রিয় বান্দাদের স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের বিবরণ তুলে ধরেছেন এভাবে-‘আর যখন তারা অহেতুক ও অনর্থক কাজকর্মের পাশ কেটে অতিক্রম করে তখন তারা ভদ্রতা বজায় রেখে পার হয়ে যায়।’ -(সুরা ফুরকান : আয়াত ৭২)
সফল মুমিনের পরিচয় বর্ণনা করেছেন এভাবে-‘আর যারা অর্থহীন কথা ও কাজ পরিহার করে ও তার প্রতি বিমুখতা প্রদর্শন করে।’ -(সুরা মুমিনুন : আয়াত ৩)
কখনো কখনো একটি কথা সারা জীবনের দুঃখের কারণ হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি কথাই মানুষকে চিরস্থায়ী জাহান্নামে পৌঁছে দিতে পারে। মহান আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে।
বিলাল ইবনুল হারিস আল-মুজানি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে ধারণাও করে না যে তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, অথচ আল্লাহ তাআলা তার এ কথার কারণে তাঁর সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য স্বীয় সন্তুষ্টি লিখে দেন। আবার তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে চিন্তাও করে না যে তা কোন পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে। অথচ এ কথার কারণে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। -(তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৯)
এর প্রমাণ ইবলিস শয়তান। একটি বাক্যই তাকে কিয়ামত পর্যন্ত অভিশপ্ত করে দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি বলেন, হে ইবলিস! আমি যাকে আমার দুই হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, নাকি তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন? সে বলল, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদা থেকে। তিনি বলেন, তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও, কেননা নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত। আর নিশ্চয়ই তোমার ওপর আমার অভিশাপ থাকবে, কর্মফল দিন পর্যন্ত। ’ (সুরা : সোয়াদ, আয়াত : ৭৫-৭৮)
এনটি