মুসাফির যে নামাজগুলোর কসর পড়বেন
মানুষের জীবনে সফর কিংবা ভ্রমণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এটি আসলে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মানুষ যখন নিজের আবাসস্থলে থাকে, তখন পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু ভ্রমণে বা সফরে গেলে কসর আদায় করতে হয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায়— কোনো আপত্তি নেই। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০১)
কসর আদায় করা— আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এক ধরনের বড় সুবিধা। কসর করা মানে সংক্ষেপ করা। আর শরিয়াত নির্ধারিত দূরত্বে সফর করলে— তখন নামাজ সংক্ষেপ করাই ইসলামের বিধান।
মূলত কসর নামাজ পড়তে হয় শরিয়তের দৃষ্টিতে মুসাফির হলে। আর শরিয়তের দৃষ্টিতে মুসাফির বলা হয়— কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে— নিজ শহর বা গ্রাম পেরিয়ে গেলেই সে মুসাফির হয়ে যায়। -(জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
মুসাফির ব্যক্তির নামাজ পড়ার নিয়ম হলো- তিনি চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত (কসর) পড়বেন। আর দুই ও তিন রাকাতবিশিষ্ট নামাজ আগের মতোই পুরো পড়ার কথা বলা হয়েছে। আর এইভাবে সংক্ষেপে নামাজ পড়ার ভেতর আল্লাহ তাআলা কল্যাণ রেখেছেন।
মুসাফির সফরের সময়ে জোহর, আসর ও এশার নামাজে কসর আদায় করবেন এবং ফজর-মাগরিবের নামাজ পুরো ও স্বাভাবিকভাবেই পূর্ণ আদায় করতে হবে। -(ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/১৩৯, আসারুস সুনান : ২৬৩)
সফরের সময় চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ অর্ধেক অর্থাৎ দুই রাকাত আদায় করার ক্ষেত্রে কারও মনে এরূপ ধারণা আসতে পারে যে, বোধহয় এতে নামাজ পূর্ণ হলো না, এটা ঠিক নয়। কারণ, কসরও শরীয়তের নির্দেশ। এ নির্দেশ পালনে গুনাহ হয় না; বরং সওয়াব পাওয়া যায়।
হজরত ইয়ালা ইবনে উমাইয়্যা বলেন, আমি ওমর ইবনে খাত্তাব রা.-কে জিজ্ঞেস করলাম,... সালাতের কসর পড়ার কারণ কি? তখন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তুমি যেটাতে আশ্চর্য হয়েছ, আমিও সেটাতে আশ্চর্যবোধ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘এটা একটি সদকা যেটি আল্লাহ তোমাদের ওপর সদকা করেছেন, সুতরাং তোমরা আল্লাহর সদকা গ্রহণ কর।’ -(মুসলিম: ৬৮৬)
এনটি