যে ২ আমলের কারণে সহজে জান্নাতে যাবে মানুষ
আল্লাহ তায়ালা মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন ইবাদতের জন্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘ আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।’-( সূরা জারিয়াত, আয়াত, ৫৬)
যারা আল্লাহর ইবাদত করবে ও তার প্রতি আনুগত্য পোষণ করবে তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাতের সুসংবাদ।
চিরস্থায়ী জান্নাতের সুসংবাদ
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদের জন্য এমন সব কানন-কুঞ্জের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনে, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় স্রোতধারা। তারা চিরস্থায়ীভাবে সে গুলোরই মাঝে অবস্থান করবে। আর এসব কানন-কুঞ্জে থাকবে পরিচ্ছন্ন থাকার ঘর। বস্তুত এ সমুদয়ের মাঝে সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর সন্তুষ্টি। এটিই হল মহান কৃতকার্যতা। (সুরা আত তাওবাহ: আয়াত ৭২)
মুসলিম মাত্রই পৃথিবীর জীবন শেষে পরকালের শান্তি ও জান্নাত প্রত্যাশা করেন। কিছু কিছু কাজ মানুষকে জান্নাতের পথ দেখায়, মানুষকে জান্নাতে পৌঁছতে সহায়ক হয়। মানুষকে আল্লাহর নেক বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে। আবার কিছু কাজ মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, মানুষকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়।
কিছু আমল মানুষকে জান্নাতের পথ দেখায়
এ সম্পর্কে হাদিসে মহানবী সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি দু’চোয়ালের মধ্যস্থল তথা মুখ ও দু’পায়ের মধ্যস্থল তথা যৌনাঙ্গের দায়িত্ব নেবে আমি তার জান্নাতের দায়িত্ব নেবো।’ (সহিহ বুখারি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৪১১)
আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহভীতি (তাকওয়া) ও উত্তম চরিত্র।’ আবার তাকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪)
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, 'সেই ব্যক্তিই তো প্রকৃত মুসলমান, যার নিজের হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ।' অর্থাৎ মুখ ও হাত দ্বারা কেউ কাউকে কষ্ট দেয় না।-(সুনানে তিরমিজি, ২৬২৭)
আল্লাহ তায়ালা সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে নারীদের যৌনাঙ্গ হিফাজত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা মুমিনুনের ৫ নং আয়াতে বলেছেন, ‘মুমিন হলো তারা যারা যৌনাঙ্গের হিফাজত করে। অর্থাৎ স্ত্রী ও শরিয়তসম্মত দাসীদের ছাড়া সব পর নারী থেকে যৌনাঙ্গের সংযত রাখে।
মুমিন নারী-পুরুষের বৈশিষ্ট্য
সুনিশ্চিত জান্নাত পাওয়ার জন্য একজন মুমিন পুরুষ ও একজন মুমিন নারীর মাঝে কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন; তাও ওঠে এসেছে কুরআনের বর্ণনায়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
اِنَّ الۡمُسۡلِمِیۡنَ وَ الۡمُسۡلِمٰتِ وَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الۡخٰشِعِیۡنَ وَ الۡخٰشِعٰتِ وَ الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ وَ الۡمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیۡنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الۡحٰفِظِیۡنَ فُرُوۡجَهُمۡ وَ الۡحٰفِظٰتِ وَ الذّٰکِرِیۡنَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا وَّ الذّٰکِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا
‘নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়ী পুরুষ ও বিনয়ী নারী, রোজা পালনকারী পুরুষ ও রোজা পালনকারী নারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাযতকারী পুরুষ ও সুরক্ষাকারী নারী এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও স্মরণকারী নারী, তাদের সবার জন্য আল্লাহর ক্ষমা ও মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ৩৫)
এনটি