কাপড়ে ‘মশা-ছারপোকা’র রক্ত লাগলে নামাজ হবে কি?
মশা-ছারপোকাসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের উপদ্রব লেগে থাকে চারপাশে। এসবের কামড়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। অনেক সময় উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে হাত দিয়ে এসব মেরে থাকেন মানুষজন। মারতে গিয়ে হাতে-কাপড়ে রক্ত লেগে যায়। কাপড়ে মশা-ছারপোকার রক্ত লেগে যাওয়ার কারণে কি কাপড় নাপাক হয়ে যাবে এবং এ কাপড় পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি?
এমন প্রশ্নের উত্তরে ফেকাহবিদ আলেমগণ বলেন, মশা-ছারপোকার রক্ত নাপাক নয়। তা কাপড়ে লাগলে কোনো সমস্যা নেই। এতে কাপড় নাপাক হবে না। তাই কারো কাপড়ে মশা-ছারপোকার রক্ত লাগলে এমন কাপড়ে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে।
তবে নামাজের আগে কাপড়ে এজাতীয় রক্ত বা ময়লা লেগে থাকার কথা জানতে পারলে যথাসম্ভব ধুয়ে নেওয়া ভালো বলে মন্তব্য করেন ফেকাহবিদরা।
হজরত আবু জাফর এবং আতা রহ. মশা ও বুরগুসের (পাখাবিহীন এক প্রকার ক্ষুদ্র কীট) রক্তে কোনো সমস্যা মনে করতেন না।’ -(মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ২০৩১)
(কিতাবুল আছল ১/৫৪; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৮৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৯৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২২৯; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৫৪২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩২০)
কষ্টদায়ক প্রাণী হত্যা করা জায়েজ?
যে প্রাণী কষ্ট দেয় এবং ক্ষতিকর— সেটা হত্যা করা জায়েয। কোন প্রাণী যদি কষ্টদায়ক এবং ক্ষতিকর হয় তাহ’লে সেগুলোকে হত্যা করা যাবে। (বুখারি, হাদিস : ৩০১৬; আবু দাউদ, হাদিস : ২৬৭৫)
তবে এর জন্য বিকল্প রাস্তা গ্রহণ করা যেতে পারে। বিশেষ করে এমন পরিবেশ তৈরি করাই শ্রেয়, যা মশা জন্মের প্রতিবন্ধক হয়। এতেকরে প্রাণী হত্যার বিধিনিষেধ সম্ভলিত হাদিসগুলোর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার হাদিসগুলোর ওপরও আমল হয়ে যাবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, ‘আবদুর রহমান ইবনে আবদুল্লাহ (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূল (সা.)-এর সফর সঙ্গী ছিলাম। তিনি তাঁর প্রয়োজনে অন্যত্র গেলেন। আমরা দুইটি বাচ্চাসহ একটি পাখি দেখতে পেয়ে বাচ্চা দুটোকে ধরে নিলাম। মা পাখিটা সাথে সাথে আসলো এবং পাখা ঝাঁপটিয়ে বাচ্চার জন্য অস্থিরতা প্রকাশ করতে লাগলো। রাসুল (সা.) ফিরে এসে বললেন, কে এর বাচ্চা নিয়ে এসে একে অস্থিরতায় ফেলেছে? বাচ্চাগুলো এদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দাও। তিনি আমাদের পুড়িয়ে দেওয়া একটা পিঁপড়ার ঢিবি দেখতে পেয়ে বললেন, কে এগুলো পুড়িয়েছে? আমরা বললাম, আমরা। তিনি বললেন, আগুনের রব ব্যতীত আগুন দিয়ে কিছুকে শাস্তি দেওয়ার কারো অধিকার নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৬৭৫)
এনটি