অন্যের ঘরে উঁকি দিলে যে গুনাহ
অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ করলে বা উঁকি দিলে অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এতে ঘরের ব্যক্তি নানা কিছুর সম্মুখীন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই ইসলাম অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
অন্যের দরজা-জানালায় উঁকি দেওয়া কিংবা অনুমতি ছাড়া কারো ঘরের ভেতরে দেখা— অমার্জনীয় অপরাধ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কারো ঘরে বিনা অনুমতিতে উঁকি দেবে, তার জন্য ওই ব্যক্তির চোখ ফুঁড়ে দেওয়া বৈধ।’ (মুসলিম, হাদিস ২১৫৮)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন—
যদি কেউ তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ছাড়া উঁকি দেয়— আর তুমি পাথর মেরে তার চোখ ফুটো করে দাও, তাতে তোমার কোনো গুনাহ হবে না।
(বুখারি, হাদিস : ৬৮৮৮)
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত হাদিসবিশারদগণ ও মুজতাহিদ ইমামদের বক্তব্যে বিভিন্নতা রয়েছে। তবে অন্যের ঘর-দরজা ও জানালা ইত্যাদি দিয়ে উঁকি দেওয়া যে পাপ— এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মনে করেন, এই হাদিসের বক্তব্য হলো ধমকিস্বরূপ। কারো ঘরে কেউ অনুমতি ছাড়া উঁকিঝুঁকি করলে— ঘরের লোক যদি পাথর ছুঁড়ে তার চোখ নষ্ট করে দেয়, তাহলে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তবে তার নিকট উঁকি দেওয়া নিশ্চয় অন্যায় ও বড় অপরাধ।
ইমাম শাফেয়ি (রহ.)-এর মতে, অনুমতি ছাড়া কেউ কারো ঘরে উঁকি দিলে— পাথর মেরে যদি সে উঁকিদাতার চোখ নষ্ট করে দেয়, তাহলে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। আর ইমাম আনাস ইবনে মালেক (রহ.) বলেন, অন্যের ঘরে উঁকি দেওয়া পাপ হিসেবে বিবেচিত।
রাসুল (সা.)-এর জীবনে এই হাদিসের ওপর আমল করতে দেখা যায়। সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কোনো এক ঘরে উঁকি দেয়। তখন রাসুল (সা.)-এর কাছে একটা ‘মিদরা’ (তথা এক ধরনের চিরুনি) ছিল, যা দিয়ে তিনি তাঁর মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তখন রাসুল (সা.) [ধমকি স্বরূপ] বলেন, যদি আমি জানতাম— তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। আর তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস ৬২৪১)