আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে গেলে যে সওয়াব পাবেন
ঈদ বা অবসরে মানুষ অবকাশ যাপনে ঘুরতে বের হন। এক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন অনেকেই। ঈদের সময় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া মুসলিম সমাজের বিশেষ সংস্কৃতিরও অংশ বটে। এর মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা পায় এবং একে অন্যের সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়। এছাড়া ইসলামের দৃষ্টিতে আত্মীয়-স্বজনের পারস্পরিক যাতায়াত প্রশংসনীয় কাজ।
সব নবী ও রাসূল অতিথিপরায়ণ ছিলেন
সব নবী ও রাসূল অতিথিপরায়ণ ছিলেন। মেহমানদারি ছিল আমাদের নবীজি (সা.)–এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য। বিশেষত হজরত ইবরাহিম (আ.) আতিথেয়তায় ছিলেন অনন্য ও অসাধারণ। তিনি দিনে অন্তত এক বেলা মেহমান ছাড়া আহার করতেন না।
আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়া ও তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার বিষয়ে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আখেরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে।’ –সহিহ বোখারি ৬১৩৮
মেহমানের সামনে খাবার পরিবেশন
দাওয়াত খাওয়া ও খাওয়ানো দুটিই সুন্নত। আন্তরিকতাপূর্ণ অনাড়ম্বর দাওয়াতের কথা ইসলাম বলেছে। দাওয়াত দিলে সাধ্যের বাইরে গিয়ে হলেও দামি খাবার খাওয়াতে হবে অথবা অবশ্যই উপহার নিয়ে যেতে হবে- এটা জরুরি নয়। এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'উপস্থিত খাবারকে তুচ্ছ মনে করা মেহমানদের জন্য বিপজ্জনক। আর ঘরে যা আছে মেহমানের সামনে পেশ করতে লজ্জা পাওয়া মেজবানের জন্যও বিপজ্জনক।' -শোয়াবুল ঈমান
সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, 'কেউ তোমার কাছে বেড়াতে গেলে খাবেন কি-না প্রশ্ন করো না। খাবার সামনে হাজির করবে। তিনি খেলে তো খেলেন; না খেলে তুলে নেবে। -আদাবুজ জিয়াফা
ফল জাতীয় খাবার আগে ও ভারি খাবার পরে পরিবেশন করা। সূরা ওয়াকিয়ার এক জায়গায় বেহেশতিদের খাবারের বর্ণনায় প্রথম ফল, তারপর গোশতের কথা এসেছে।
উত্তম মেহমানদারি ও আপ্যায়ন প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকে। আর যারা স্বভাবজাত লোভ-লালসা এবং কামনা থেকে মুক্তি লাভ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা হাশর : আয়াত ৯)
বিদায়ের সময় মেহমানকে এগিয়ে দেওয়া
পরিচিত আত্মীয়-স্বজন এলে তাদের যথাযথ আপ্যায়ন, আদর-যত্ন করা নৈতিক দায়িত্ব। আর মেহমান চলে যাওয়ার সময় তাকে এগিয়ে দিয়ে আসা সুন্নত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তির মেহমানের সঙ্গে (বিদায়কালীন) বাড়ির দরজা পর্যন্ত সঙ্গ দেওয়া সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। -মিশকাত
এছাড়া মেহমানকে বিদায় দেওয়ার সময় একটি দোয়া পড়া সুন্নত। রাসুল (সা.) তাঁর সেনাবাহিনীকে বিদায় দেওয়ার সময় এই দোয়া পড়তেন।
উচ্চারণ : ‘আসতাও দিউল্লাহা দ্বিনাকুম, ওয়া আমানাতাকুম, ওয়া খাওয়াতিমা আ’মালিকুম। ’
অর্থ : ‘আমি আল্লাহর নিকট তোমাদের দ্বিন, আমানত ও সর্বশেষ আমলের হিফাজতের জন্য দোয়া করছি।’ সূত্র : আবু দাউদ, হাদিস : ২৬০১
এনটি