যেভাবে ৪০ দিন নামাজ পড়লে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবেন
প্রশ্ন : একজনের কাছে শুনেছি— কোনো ব্যক্তি যদি ইমামের সঙ্গে নামাজের প্রথম তাকবির চল্লিশ দিন পর্যন্ত পায়, তাহলে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং মুনাফিকি থেকেও মুক্তি দেওয়া হয়। আমার জানার বিষয় হলো, এই ফজিলত পাওয়ার জন্য কি একদম প্রথম থেকেই ইমামকে পাওয়া লাগবে? না একটু দেরিতে পেলেও হবে?
উত্তর : যে হাদিসে উক্ত ফজিলত বর্ণিত হয়েছে সেই হাদিসটি নিম্মরূপ। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ আদায় করবে এবং সে প্রথম তাকবিরও পাবে— তার জন্য দুইটি মুক্তির পরওয়ানা লেখা হবে- (এক) জাহান্নাম থেকে মুক্তি; (দুই) নেফাক থেকে মুক্তি।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৪১)
বিখ্যাত তাবেয়ি মুজাহিদ (রহ.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-র একজন বদরি সাহাবিকে বলতে শুনেছি, তিনি তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছেন, তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামাজ পেয়েছে? ছেলে বললেন, জি, পেয়েছি। আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাকবিরে উলা তথা ইমামের সঙ্গেই তাকবির পেয়েছ? ছেলে বললেন, না। তিনি বললেন, তুমি একশ কালো চোখ বিশিষ্ট উটের চেয়ে অধিক কল্যাণ হারিয়েছ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ২০২১)
আমাদের পূর্বসুরীরা তাকবিরে উলার প্রতি বেশ গুরুত্ব দিতেন। তাবেয়ি সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) একাধারে পঞ্চাশ বছর তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। (হিলইয়াতুল আওলিয়া : ৪/২১৫)
এ হাদিস থেকে স্পষ্ট হয় যে, ইমামের প্রথম তাকবির বলার সঙ্গে সঙ্গে তাকবির বলে নামাজ শুরু করলে— তাকবিরে উলা পাবে। সুতরাং ইমামের তাকবিরে তাহরিমার সঙ্গেই নামাজে শরিক হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ইমামের সঙ্গে তাকবির ধরার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া মুস্তাহাব। (রওজাতুত তালেবিন : ১/৪৪৬)
উল্লেখ্য যে, সুরা ফাতেহা শেষ হওয়ার আগে জামাতে শরিক হতে পারলেও কোনো কোনো ফকিহ তাকবিরে উলার সওয়াব হাসিল হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেছেন। বিখ্যাত তাবেয়ি ওয়াকি (রহ.)-কে তাকবিরে উলা সম্পর্কে জিঞ্জেস করা হলে তিনি বলেন, ইমাম সুরা ফাতেহা শেষ করার আগ পর্যন্ত তাকবিরে উলা ধর্তব্য হবে। তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে প্রথম রাকাতের আমিন পাবে, সে তাকবিরে উলার ফজিলত পেয়ে যাবে।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব