নামাজে হেসে ফেললে আবার নামাজ পড়তে হবে কি?
নামাজের মাঝে হালকা হেসে ফেললে নামাজ কি ভেঙে যাবে? মানে অট্টহাসিও নয়, আবার মুচকি হাসিও নয়। মুখ থেকে শব্দ হয়নি— কিন্তু শ্বাস বের হয়ে আসে হালকা জোরে। আর আমি নিজেও কোনো প্রকার শব্দ শুনতে পাইনি, কিন্তু শ্বাস বের হওয়ার শব্দ পেয়েছি।
এই প্রশ্নের উত্তর হলো- নামাজ ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো- নামাজে শব্দ করে হাসা ও কথা বলা। আর নামাজে শব্দ করে অট্টহাসি দিলে ওজুসহ ভেঙে যায়। (কানযুদ দাকায়েক : ১/১৪০)
মুআবিয়া ইবনুল হাকাম আস সুলামি (রা.) নওমুসলিম অবস্থায় নামাজে কথা বললে— রাসুল (সা.) নামাজের পর তাকে বলেন, ‘নামাজের মধ্যে কথাবার্তা ধরনের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশত তাসবিহ, তাকবির বা কোরআন পাঠ করতে হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৩৭)
নামাজে হাসে ওঠা ৩ প্রকার
নামাজে যদি হাসে,তাহলে এক্ষেত্রে তিন সুরত। যদি শুধু দাঁত খুলে, হাসির আওয়াজ একেবারেই না হয়— তাহলে নামাজও ভাঙবে না। অজুও ঠিক থাকবে; এটি মাকরুহ। (ফতওয়া আলমগিরি : ১/১২; আদ্দুররুল মুখতার : ১/১৪৫)
আর যদি এতটুকু আওয়াজ হয় যে নিজে শুনতে পারে অথবা একেবারে কাছের মানুষ শুনতে পারে, তাহলে শুধু নামাজ ভেঙে যাবে।
কিন্তু যদি এত জোরে হাসে যে, অন্যান্য লোকেরা অথবা মজলিসের লোকেরা শুনতে পারে— তাহলে নামাজ এবং অজু উভয়টাই ভেঙে যাবে। (আলমগিরি : ১/১২; আদ্দুররুল মুখতার : ১/১৪৫)
এক হাদিসে এসেছে, অন্ধ এক ব্যক্তির কুপে পড়ে যাওয়ার উপক্রম দেখে নামাজে কিছু সাহাবি হেসেছিল, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন যে— যারা হেসেছে, তারা যেন নামাজ আবার আদায় করে। (মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক : ০২/৩৭৬)
এক বর্ণনায় এসেছে, অট্টহাসি বলা হয়— যেটা নিজে ও আশেপাশের লোকেরা শুনতে পারে; দাঁত প্রকাশ পাক বা না পাক। (মাজমাউল আনহুর : ০১/২০)
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত সুরতে যেহেতু হাসির কোনো শব্দই হয়নি, তাই নামাজ ভেঙে যাবে না; তবে এহেন কাজ মাকরুহ বলে সাব্যস্ত হবে।