সুন্নত নামাজের কাজা পড়ার নিয়ম
আমার যদি একদিন ফজরের নামাজ কাজা হয় তাহলে কীভাবে কাজা আদায় করব? শুধু ফরজ পড়ব না কি সুন্নাতসহ? আবার যদি ফজরের নামাজে শুধু ফরজ পড়তে পারি, সুন্নাত কী পরে পড়তে পারব? এক লেখায় দেখলাম সূর্যোদয়ের পরে পড়া যায়, এখন যদি আমি যোহরের ওয়াক্তে পড়ি তাহলে হবে?
আবার আমার জানা মতে যোহরের চার রাকাত সুন্নত যদি ফরজের আগে পড়তে না পারি— তাহলে ফরজের পরে পরে যায়। এটা কি সঠিক? এরকম কি এশার ওয়াক্তেও আছে?
এই প্রশ্নের উত্তর হলো- শরিয়তের বিধান হলো, ছুটে যাওয়া নামাজগুলোর মধ্যে শুধু ফরজ এবং বিতর নামাজের কাজা করতে হবে।সুন্নতের কাযা করা জরুরি না। তবে কেউ করে নিলে সমস্যা নেই। (ইমদাদুল ফাতাওয়া-১/৩৯৮)
ফজরের সুন্নত কোনো কারণে পড়তে না পারলে, তার কাজা আদায় করবে— সূর্য উদিত হওয়ার পর। কিন্তু জোহরের ওয়াক্ত
চলে এলে কাজা আদায় করবে না।
হাদিস শরিফে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, ‘নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না; সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১/৯৬)
কেউ যদি জোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারে, তাহলে তার জন্য জোহরের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে— পূর্বের চার রাকাত সুন্নত আদায় করে নেওয়া উচিত। [ফরজ শেষে দুই রাকাত সুন্নত পড়ার পর তা আদায় করে নেবে।] (আল মুহিতুল বুরহানি : ২/২৩২; ফাতহুল কাদির : ১/৪১৫; আদ্দুররুল মুখতার : ২/১২-১৩)
আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘নিশ্চয় রাসুল (সা.) যদি কোনো দিন জোহরের প্রথম চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারতেন, তাহলে তা ফরজের পর আদায় করে নিতেন।’ (তিরমিজী, হাদিস : ৪২৬)
আরেকটি হাদিসে আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন- ‘নবী (সা.) যদি জোহরের পূর্বে চার রাকাত না আদায় করতেন, তবে জোহরের (ফরজের) পর তা আদায় করতেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪২৬)
এখন আপনার ফজরের নামাজ যদি কাজা হয়, তাহলে সেদিন জোহরের ওয়াক্ত আসার আগেই কাজা পড়লে— ফজরের সুন্নতসহ কাজা আদায় করবেন।
আর যদি জোহরের ওয়াক্ত চলে আসার পর ফজরের কাজা আদায় করেন বা অন্য কোনো ওয়াক্ত বা অন্য কোনো দিন উক্ত ফজরের কাজা আদায় করেন, সেক্ষেত্রে শুধু ফজরের ফরজ নামাজের কাজা আদায় করবেন; সুন্নতের কাজা আদায় করতে হবে না।
এছাড়াও জোহরের ক্ষেত্রে যদি চার রাকাত সুন্নাত না পড়ে আগে ফরজ নামাজ পড়া হয়, তাহলে ফরজ শেষে দুই রাকাত সুন্নাত আদায় করে— এরপর জোহরের আগের সেই চার রাকাত সুন্নাত আদায় করবেন। আর আছরের ওয়াক্ত চলে এলে জোহরের আগের সেই চারা রাকাত সুন্নাত আদায়ের সময় থাকবে না।
লক্ষণীয় যে, বাকি নামাজগুলোর আগে যেহেতু সুন্নতে মুয়াক্কাদা নেই, তাই সেগুলোর কাজা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসার সুযোগ নেই।