রমজানে ভ্রমণে রোজা রাখার নিয়ম
রমজানের রোজা রাখা আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন। তবে মুসাফিরের জন্য মুসলিম উম্মাহর সর্বসম্মতিক্রমে রোজা না রাখা বৈধ। মুসাফির রোজা রাখতে সক্ষম হোক অথবা অক্ষম হোক— কিংবা রোজা তার জন্য কষ্টদায়ক হোক অথবা না হোক।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘...কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ বা মুসাফির হলে সে অন্য কোনো দিন গণনা করবে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৪)
ভ্রমণে রোজা না রাখার নিয়ম কখন?
সফরে রোজা না রাখা বৈধ হওয়ার শর্ত হলো- সফর নির্দিষ্ট পরিমাণ মতো দূরত্বের হতে হবে। শরিয়তে সফরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দূরত্ব হলো- ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার।
যদি কোনো ব্যক্তি সফরে বা ভ্রমণে থাকা অবস্থায়ও রোজা পালন করেন, সেটা উত্তম। তবে বেশি কষ্ট হলে বা ইচ্ছা করলে তিনি রোজা ছাড়তে পারবেন। এই রোজা পরে সুবিধামতো নিকটতম সময়ে কাজা আদায় করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন : খেলার জন্য রোজা থেকে বিরত থাকা যাবে?
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) রমজান মাসে মদিনা থেকে (মক্কা অভিযানে) রওনা হন। তার সঙ্গে ছিলেন ১০ হাজার সাহাবি। তখন হিজরত করে চলে আসার সাড়ে আট বছর পার হয়ে গিয়েছিল। তিনি ও তার সঙ্গী মুসলমানরা রোজা অবস্থায় মক্কা অভিমুখে রওনা হন। অবশেষে তিনি যখন উসফান ও কুদাইদ স্থানদ্বয়ের মধ্যবর্তী কাদিদ নামক জায়গায় ঝরনার কাছে পৌঁছলেন তখন তিনি ও তাঁর সঙ্গী মুসলমানরা ইফতার করেন। (বুখারি, হাদিস : ৪২৭৬)
সফরে রোজা শুরু করলে যা করবেন
হানাফি মাজহাব মতে, সফর অবস্থায় নিয়ত করে রোজা রাখা শুরু করলে, তা ভাঙা জায়েজ নয়। কেউ ভেঙে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফফারা দিতে হবে না। শুধু কাজা করবে। (রাদ্দুল মুহতার : ২/৪৩১)
আরও পড়ুন : গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীর রোজার বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা
একইভাবে যে ব্যক্তি মুকিম (স্থায়ী বাসিন্দা) অবস্থায় সাহরি খেয়ে সফর শুরু করেছেন, তার জন্য সফরের অজুহাতে রোজা ভাঙা জায়েজ নয়। ভাঙলে গুনাহগার হবেন, তবে শুধু রোজার কাজা ওয়াজিব হবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/২০৬)