যেসব কারণে রোজা ভাঙলে গুনাহ হবে না
রমজানের রোজা মুসলমানদের ওপর ফরজে আইন। শরিয়ত সমর্থিত কারণ ছাড়া ছেড়ে দেওয়া কবিরা গুনাহ। আর যে তা অস্বীকার করবে, সে কাফির হয়ে যাবে। কেউ বিনা ওজরে রোজা না রাখলে— ফাসিক ও কঠিন গুনাহগার হতে হবে।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩; ফাতওয়া তাতারখানিয়া, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৫০)
তবে কিছু কারণে শরিয়ত রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি দিয়েছে। কী কী কারণে বা কোন কোন ব্যক্তির রোজা না রাখা কিংবা ভেঙে ফেলা জায়েজ— তা নিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে এই লেখা।
এক. যদি এমন অসুস্থ হয়ে পড়ে যে রোজা রাখার শক্তি নেই বা রোজা রাখার দ্বারা অসুস্থতা বেড়ে যাবে, তাহলে তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। তবে হ্যাঁ, যখনই সুস্থ হয়ে যাবে, তখনই তার ওপর রোজা কাজা করে নেওয়া ওয়াজিব। (আপকে মাসায়েল : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ২০২)
দুই. রোজাদার যদি এমন দুর্বল হয়ে পড়ে যে, রোজা রাখার শক্তিই নেই। (আপকে মাসায়েল : খণ্ড. ৩, পৃষ্ঠা : ২০৩)
তিন. এমন ক্ষুধা বা পিপাসা লাগে যে প্রাণ চলে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। (আলমগিরি : খণ্ড. ১, পৃষ্ঠা : ২০৭)
আরও পড়ুন : রোজা ভঙ্গের কারণ কী কী?
চার. কেউ যদি রোজা থাকার কারণে জীবনযাপনের উপকরণ উপার্জন করতে দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে তার জন্য রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি রয়েছে। তবে তা পরে কাজা করে নিতে হবে। তা-ও সম্ভব না হলে ফিদিয়া আদায় করবে এবং প্রতি রোজার পরিবর্তে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ দান করে ফিদিয়া আদায় করবে। (শামি : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৪০০)
পাঁচ. গর্ভধারিণী বা স্তন্যদানকারিণী মহিলা যদি নিজের অথবা নিজের বাচ্চার প্রাণনাশের আশঙ্কা করেন, তাহলে তার জন্য রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ আছে। (আলমগিরি : খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ২০৭)
আরও পড়ুন : অজুর সময় গলায় পানি গেলে রোজা ভেঙে যাবে কি?
ছয়. অনুরূপভাবে ফসল কর্তন করার ক্ষেত্রে। যদি রোজা থাকা অবস্থায় ফসল কর্তন করা সম্ভব না হয়। অন্যদিকে দেরি হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে রোজা না রাখার অনুমতি আছে এবং অন্য সময় কাজা করে নেবে। (শামি : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৪০০)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে ও সুস্থ থেকে সবগুলো রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।