আন্তরিকতা ও পরোপকার মুমিনের বৈশিষ্ট্য
মুমিন অন্তরঙ্গ প্রকৃতির হয়। সে অন্যদের ভালোবাসে। অন্যরাও তাকে ভালোবাসে। অন্যকে সে আপন করে নেয়। অন্যরাও তাকে কাছে টেনে নেয়। এই বৈশিষ্ট্য কারো মধ্যে না থাকলে, হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী তার মধ্যে যেন কোনো কল্যাণই নেই। কারণ, তখন সে অন্যদের উপকার করতে পারে না। আবার অন্যরাও পারে না তার থেকে উপকৃত হতে।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন—
মুমিন সবার আপন হয়, (সে অন্তরঙ্গ হয় এবং তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়া যায়।) যে অন্তরঙ্গ হয় না এবং যার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়া যায় না— তার মাঝে কোনো কল্যাণ নেই।
(মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ৯১৯৮)
বলাবাহুল্য যে, মুমিনের এই প্রীতি-ভালোবাসা ও অন্তরঙ্গতা— সবই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হতে হবে। এবং এসব আল্লাহর বিধানের অধীনে হবে। (মাআরিফুল হাদিস, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ১২৮)
শান্তি-সম্প্রীতি অক্ষুন্ন থাকে
ভ্রাতৃত্ববোধের মাধ্যমে সামাজিক শান্তি-সম্প্রীতি বজিয়ে থাকে। পারস্পরিক ভালোবাসার মাধ্যমে সর্বত্র আন্তরিকতা ও মায়ানুভবতা বিরাজ করে। এ কারণেই মহান আল্লাহ তাআলা মুমিনদের পরস্পর ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক অটুট রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা দুই ভাইয়ের মাঝে মীমাংসা করে দাও।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১০)
এ প্রসঙ্গে হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবেসেছিলে তারা কোথায়? আমি আজ তাদের আমার ছায়ায় আশ্রয় দেব। আজকের এই দিনে আমার ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৬)
মুমিনরা সহযোগিতা করে
মহান আল্লাহ প্রত্যেক মুমিনকে সৎকাজে আদেশ দিতে বলেছেন। অসৎ কাজে বাধা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। জীবনে এই অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারলে, মানুষের শ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ পাওয়া হয়। ভালো কাজে আত্মনিয়োগ করলে মানুষের ভালোবাসা লাভ হয়। অন্যকে সহযোগিতা করলে, মানুষের প্রিয় হয়ে উঠা যায়। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাকওয়া ও ভালো কাজে পরস্পরের সহযোগিতা করো। পাপাচার ও অন্যায় কাজে সহযোগিতা করো না।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ২)
রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘মুমিন মুমিনের জন্য আয়না স্বরূপ। মুমিন মুমিনের ভাই। সে তার জমি সংরক্ষণ করে এবং তার অনুপস্থিতিতে তাকে হেফাজত করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯১৮)