সূর্য ওঠার কতক্ষণ পর ফজরের নামাজ কাজা পড়া যাবে?
ফজরের সালাতের সময় যদি কখনও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায়— ধরুন সূর্যোদয়ের পর ১০/১৫ মিনিটের মতো; এমন সময়ে কি আমি ফজরের সালাত আদায় করতে পারব?
এমন প্রশ্নের উত্তর হলো- সূর্যোদয়ের সময় অর্থাৎ যতক্ষণ না তার হলুদ রঙ ভালোভাবে চলে যায় ও আলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে; এ সময় নামাজ পড়া নিষেধ। এরজন্য আনুমানিক ১৫-২০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়। সুতরাং এসময়ে কোনো নামাজ পড়া যাবে না। এসময়ের পর ফজর পড়বেন কাযা হিসেবে। কেননা হাদিস শরিফে এসেছে, উকবা বিন আমের জুহানি (রহ.) বলেন- ‘তিনটি সময়ে রাসুল ﷺ আমাদের নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য অস্ত যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৩)
উল্লেখ্য, ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নামাজ আদায় না করা কবিরা গুনাহ। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির,যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর।’ (সুরা মাউন, আয়াত : ৪-৫)
আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) এই আয়াতের তাফসিরে বলেন, ‘যারা নামাজের নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরিতে আদায় করে…।’ (তাফসিরে কুরতুবি : ২০/২১১)
ঘুম না ভাঙলে ফজরের নামাজ যেভাবে পড়বেন
ঘুম থেকে জাগ্রত হতে না পারলে বা ভুলে যাওয়ার কারণে ফজর নামাজ ছুটে গেলে তার ওপর কাজা করা ওয়াজিব। কেননা রাসুলুল্লাহ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে ভুলে যায় বা সে সময় ঘুমিয়ে থাকায় তা ছুটে যায়, তার কাফফারা হলো যখনই তা মনে হবে, তখনই (সঙ্গে সঙ্গে) নামাজ আদায় করে নেবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৮৪)
তবে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নামাজ আদায় না করা কবিরা গুনাহ। আর প্রতিদিন ভুল করা গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন।’ (সুরা মাউন, আয়াত: ৪-৫)
তাফসিরবিদ আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন উল্লিখিত আয়াতে সেসব নামাজির কথা বলা হয়েছে, ‘যারা নামাজের নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরিতে আদায় করে।’ (তাফসিরে কুরতুবি, খণ্ড : ২০, পৃষ্ঠা : ২১১)