মিথ্যা শপথ করলে যে গুনাহ হয়
শপথ করে মানুষ কথায় জোর তৈরি করে। মূলত মানুষ কথা, কাজ, কৃত ওয়াদা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সুদৃঢ় করার জন্য শপথ করে। আর শপথ ব্যক্তিকে আরও দায়িত্ববান করে তোলে এবং একটা আস্থার জায়গা তৈরি করে। ফলে মিথ্যা শপথ করা বা শপথ করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা বড় ধরনের পাপ।
মিথ্যা শপথ একটি কবিরা গুনাহ
কাউকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য বা ঠকানোর জন্য কিংবা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে শপথ করা নিতান্ত গর্হিত কাজ। এমন কাজ কেউ করে থাকলে আল্লাহ তাআলা তাকে শাস্তি দেবেন। কারণ, মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ।
আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কবিরা গুনাহগুলো হচ্ছে, আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কাউকে শরিক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া, অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা শপথ করা।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬৭৫)
মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রিকারীর শাস্তি
মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রিকারীর সঙ্গে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। তার জন্য আছে কঠিন শাস্তি। আবু জার গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত নবী (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তি এমন যে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেনও না, এমনকি তাদের গুনাহ থেকে পবিত্রও করবেন না। উপরন্তু তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুল (সা.) কথাগুলো তিনবার বলেছেন।
আরও পড়ুন : মানুষের নাম বিকৃত করলে যে গুনাহ
আবু জার (রা.) বলেন, তারা সত্যিই ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত। তবে তারা কারা হে আল্লাহর রাসুল! রাসুল (সা.) বলেন, ‘টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরিধানকারী, কাউকে কোনো কিছু দিয়েই খোঁটা দানকারী এবং মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রেতা।’ (মুসলিম, হাদিস : ১০৬)
বিভিন্ন দায়িত্ব গ্রহণের সময় শপথ করলে...
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পদে ও প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্কালে শপথ করা হয়। কিন্তু পরে যদি এই শপথ মানুষের অধিকার হরণের কাজে ব্যবহৃত হয়, তা মারাত্মক অন্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
আরও পড়ুন : গুজব ছড়ালে যে গুনাহ
আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ (মিথ্যা) শপথের মাধ্যমে কোনো মুসলিমের অধিকার হরণ করলে আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে দেন। এবং তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭)