স্বাস্থ্যবিধি মেনে টরন্টোয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি
স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে টরন্টোয় বসবাসরত হিন্দুধর্মাবলম্বী বাংলাদেশি কানাডিয়ানরা। সশরীরে উপস্থিত হয়ে পূজার পাশাপাশি ভার্চুয়াল উৎসবমালা মিলিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পালনের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে মন্দিরগুলো।
কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় প্রচারিত ‘শওগাত আলী সাগর লাইভ’র আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশি কানাডিয়ানদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত টরন্টোর তিনটি হিন্দু মন্দিরের প্রধানরা এই তথ্য জানান।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) রাতে ‘কানাডায় দুর্গাপূজা : প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই আলোচনায় অংশ নেন টরন্টো দুর্গাবাড়ির অন্যতম পরিচালক ড. সুশীতল চৌধুরী, হিন্দু ধর্মাশ্রমের প্রেসিডেন্ট সমরেন্দ্র ঘোষ এবং বাংলাদেশ-কানাডা হিন্দু কালচারাল সোসাইটি এবং হিন্দু মন্দিরের আহ্বায়ক প্রদ্যুৎ চক্রবর্তী।
তিন মন্দিরের প্রধানরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কমিউনিটির সবাইকে উৎসবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোভিডের কারণে গত বছর দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা করা যায়নি। এবার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটায় সরকারি বিধিমালা মেনে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশিদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত মন্দিরগুলোর মধ্যে 'টরন্টো দুর্গাবাড়ি’ এই বছর দুর্গাপূজা উদযাপনে বড় ধরনের আয়োজন করছে। মন্দিরের অন্যতম পরিচালক ড. সুশীতল চৌধুরী জানান, মন্দিরে সশরীরে এসে দুর্গাপূজায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকদের বাইরে একটি সিকিউরিটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য।
ড. সুশীতল চৌধুরী মন্দিরে এসে পূজায় আগ্রহীদের অনলাইনে নাম নিবন্ধনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভক্তরা পূজামণ্ডপে ঢুকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন। বাইরে বিশালাকার তাঁবুতে অপেক্ষায় থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ফেডারেল, প্রভিন্সিয়াল এবং সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি বুথ করে পূজা চত্বরে উপস্থিত থাকবেন বলেও তিনি জানান।
হিন্দু ধর্মাশ্রমের প্রেসিডেন্ট সমরেন্দ্র ঘোষ সভাপতি বলেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়ালভাবে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মন্দিরে পূজা এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার ব্যবস্থা থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণের মাধ্যমে স্বল্পসংখ্যক পূজারিকেই মন্দিরে পূজার সুযোগ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ-কানাডা হিন্দু মন্দিরের আহ্বায়ক প্রদ্যুৎ চক্রবর্তী জানান, তাদের মন্দিরে 'আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে ভক্তদের মন্দিরে পূজা এবং প্রসাদ গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা অনলাইনে ভার্চুয়ালি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মন্দিরের প্রধানরা জানান, বছরের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব নিয়ন্ত্রিভাবে উদযাপন করা কঠিন। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই সব আয়োজন করতে হচ্ছে। তারা সবাইকে মন্দিরের নিয়ম মেনে শারদীয় দুর্গোৎসবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর আলোচনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব একটি সর্বজনীন আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছে। সব ধর্মের মানুষই এই উৎসবে অংশ নেয়। সব মানুষকে ভালোবাসায় গ্রহণ করতে পারাটাই যেকোনো গতিশীল ধর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
জেডএস