ক্যালগেরি সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী বাংলাদেশি মিজানুর
আগামী ১৮ অক্টোবর কানাডার ক্যালগেরিতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে বিভিন্ন ভাষাভাষীর ২৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মেয়র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিজানুর রহমান।
ক্যালগেরির সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীরা করোনায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শহর চষে বেড়াচ্ছে। লিফলেট, পোস্টার আর সাইনবোর্ডে সয়লাব এখন পুরো ক্যালগেরি।
অন্যদিকে কানাডার বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে এবার মিজানুর একাই সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
ছোট্ট বয়সে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করতেন। বাংলাদেশে থাকার সময় ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিভিন্ন দেশে বসবাস করার সুবাদে তিনি রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা লাভ করেন।
এছাড়াও তিনি বাংলা, ইংরেজি, ফরাসি, ইতালীয়, হিন্দি, উর্দু ইত্যাদি ভাষায় দক্ষ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর ১৯৮৮ সালে কানাডায় এসে বিভিন্ন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।
২০১৫ সালে, মিজানুর রহমান ক্যালগেরি পশ্চিমের এনডিপি রাজনৈতিক দলের প্রথম রানার-আপ প্রার্থী ছিলেন। তিনি ইউনাইটেড কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনী এলাকার পরিচালনা পর্ষদের একজন কার্যকরী সদস্য। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক।
মিজানুর রহমান তার রাজনৈতিক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ক্যালগেরিবাসী তথা প্রবাসীদের সেবায় এগিয়ে আসতে চান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্যালগেরি শহরের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আমি অবগত। শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটি নয়, অন্যান্য সংখ্যালঘিষ্ঠ নৃজাতি কমিউনিটিগুলোর একই অবস্থা। কানাডার প্রধান শ্বেতাঙ্গ জাতি যে পর্যায়ে এগিয়ে আছে তাতে কানাডার সব সুযোগ-সুবিধা তারাই ভোগ করছেন।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘু নৃজাতি কমিউনিটিগুলোর বড় সমস্যা হচ্ছে ভাষা ও প্রতিকূল আবহাওয়া। ফলে শ্বেতাঙ্গ জাতির সঙ্গে চাকরির বাজার ও ব্যবসা বাণিজ্য আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আসন্ন ক্যালগেরি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হলে এই সমস্যাগুলো পরিবর্তনের জন্য আমাদের কমিউনিটি নেতাদের কানাডিয়ান জীবনযাত্রা ও ভাষা শিক্ষাকে উৎসাহিত করব।
এছাড়াও আমার নির্বাচনী এজেন্ডায় মহান ভাষা আন্দোলনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক একটি শহীদ মিনার স্থাপন করার অঙ্গিকার করেছি। যেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাকে সম্মান করতে কানাডিয়ানরাও এগিয়ে আসবে। এই শহীদ মিনার আমাদের চেতনাকে সমৃদ্ধ করবে।
তিনি বলেন, কানাডার প্রধান শ্বেতাঙ্গ সমাজ আমদের অদক্ষ শ্রমিক মনে করে। কিন্তু আমরা কেউই অদক্ষ নই। শুধু ভাষাই প্রতিবন্ধক। সমস্যাটি অতিক্রম করতে পারলে কানাডার মাটিতে আমরা অনেক সুযোগ সুবিধা লাভ করব।
কানাডার নির্বাচন এবং রাজনীতিতে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ কানাডার সরকার এবং রাজনীতিতে কমিউনিটির গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে, ফলে অভিবাসন, শিক্ষা, শ্রমশক্তি রপ্তানি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করছেন কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এমএইচএস