কুয়েতের মরুতে সবুজ ফলাচ্ছেন বাংলাদেশিরা
পশ্চিম এশিয়ার দেশ কুয়েত। মোট আয়তন ১৭ হাজার ৮২০ বর্গকিলোমিটার। সৌদি আরব ও ইরাক সীমান্ত ঘেঁষা অফরা, আবদালি ও জাহারা জুড়ে রয়েছে দেশটির বিস্তৃত মরু অঞ্চল। অসংখ্য বাংলাদেশি এই মরু অঞ্চলের কৃষিখাতে কর্মরত রয়েছেন। তাদের হাতের ছোঁয়ায় ধূসর মরুতে এখন সবুজের সমারোহ।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম তেলসমৃদ্ধ ধনী দেশ হলেও সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল আমদানি করতে হয় তাদের। প্রতি বাজেটে কৃষিখাতে উৎপাদন ও উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
দেশাটির কৃষিখাতে যারা কাজ করেন তাদের বেশিরভাই বাংলাদেশি। অন্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিকের কাজের সুনাম ও চাহিদা রয়েছে কুয়েতে।
বাংলাদেশিরা ধৈর্য্য, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে দেশটিতে দেশি-বিদেশি নানা জাতের শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন করছেন। যেগুলো কুয়েত সেন্ট্রাল সবজি মার্কেট ও সুপারশপগুলোতে বিক্রি হচ্ছে।
অনেক বাংলাদেশি স্থানীয় কুয়েতিদের কাছ থেকে মাজরা ইজারা নিয়ে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করান। তেমনি একজন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের রহিম উদ্দিন ভুঁইয়া। তিনি মালিকের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৭০০ কুয়েতি দিনারে মাজরা ভাড়া নেন। সেখানে নিজে শ্রমিক দিয়ে বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষাবাদ করেন। তার মাজরায় বর্তমানে দৈনিক ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন, যাদের সবাই বাংলাদেশি।
রহিম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ভিসা বন্ধ হওয়ায় জনবলের অভাবে অনেক জায়গা অনাবাদি রয়েছে। বাংলাদেশিরা যেভাবে মেধা ও শ্রম দিয়ে মরুর বুকে নানাজাতের শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন করছেন তাতে মাজরার মালিক ও স্থানীয়রা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার কুয়েতের কৃষিখাতে কম খরচে সরকারিভাবে শ্রমিক পাঠাতে পারে। এতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাবে। যা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
মাজরার শ্রমিক মোহাম্মদ নাসির জানান, তারা টমেটো, বেগুন, বড়বটি, লাল শাক, ধনিয়া, মূলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পুদিনা, কলমি, কুমড়াসহ নানাজাতের দেশি-বিদেশি শাকসবজি ও ফল চাষাবাদ করেন।
তিনি জানান, দৈনিক মজুরি হিসেবে ৮ থেকে ১০ দিনার পান শ্রমিকরা। যারা কোম্পানি ভিসার তারা ৮০ দিনার থেকে ১৫০ দিনার পর্যন্ত আয় করে থাকেন। থাকা-খাওয়া মালিকপক্ষ বহন করেন।
শীত মৌসুমে কুয়েতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মরু অঞ্চলে ভীড় জমান কুয়েতিরা। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরদেরও দেখা মেলে সেখানে।
এসআরএস