অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমার প্রয়োজন নেই
মালয়েশিয়ায় গত বছরের নভেম্বরে শুরু হওয়া শ্রম পুনরুদ্ধার কর্মসূচি এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় অবৈধ অভিবাসীদের জন্য পুনরায় সাধারণ ক্ষমার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জয়নুদিন। তিনি বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার জন্য পরিচালিত অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবার (১১ জুন) দেশটির জাতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে হামজা বলেন, যেসব অভিবাসীর যথাযথ কাগজপত্র নেই। এ অভিযানের কারণে যারা মালয়েশিয়ায় থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন তাদের দেশে পাঠানো সহজ হবে। ফলে অবৈধ অভিবাসীদের আর লুকিয়ে থাকার প্রয়োজন হবে না।
এদিকে লকডাউন চলাকালে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সরকারের এ অভিযানের সমালোচনা করেছে অনেক মানবাধিকার সংগঠন। তাদের দাবি, করোনা টিকা কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য এ অভিযান বন্ধ রাখা উচিত। একইসঙ্গে তারা অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমার আহ্বান জানিয়েছে। তাছাড়া এ অভিযানের ফলে অবৈধ অভিবাসীদের আত্মগোপনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যা করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জয়নুদিন বলেন, অভিযান পরিচালনা না করলে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে আনা সম্ভব হবে না। যাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য সরকারের হাতে নেই তাদের কীভাবে সাধারণ ক্ষমা করা হবে? আমাদের সবসময় দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।
তিনি বলেন, পুনরুদ্ধার কর্মসূচি শুরুর পর থেকে ২ লাখেরও বেশি অভিবাসী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার অভিবাসী বৈধতা পেতে আবেদন করেছেন। বাকি প্রায় ১ লাখ অবৈধ অভিবাসী নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে হামজা বলেন, আমাকে আমার কাজটি করতে দিন। আমরা অবৈধ অভিবাসীদের আটক করে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। কিছু নিয়োগকর্তা অবৈধ অভিবাসীদের কাজে নিতে আমাদের কাছে আবেদন করেছেন। পর্যায়ক্রমে তাদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় পিআর স্ট্যাটাস, অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট এবং স্বামী-স্ত্রী ভিসাসহ বিভিন্ন ভিসায় অন্তত ২.৫ মিলিয়ন বিদেশি নিবন্ধিত ছিলেন। আমরা তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। আমরা জানি তারা কোথায় অবস্থান করছেন। কাজেই যেকোনো সময় তাদের ট্রেস করে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে।
হামজা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) হাইকমিশনারকে সতর্ক করে বলেন, ইউএনএইচসিআরের কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। তা নাহলে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা আগামী কয়েক বছরে আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের ফেসবুক পেজে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও শ্রম পুনরুদ্ধার কর্মসূচি অব্যাহত থাকার কথা জানানো হয়। তবে এ কর্মসূচির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রত্যাশা অবৈধ অভিবাসীদের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের কূটনৈতিকরা মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এসকেডি