ট্রেন দুর্ঘটনার দ্বিতীয় বছর, ধর্মঘট-বিক্ষোভে অচল গ্রিস

২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রিসের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫৭ জন নিহতের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে ন্যায়বিচারের দাবিতে ধর্মঘট ও বিক্ষোভ করেছেন লাখ লাখ মানুষ।
শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পর শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ১টা থেকে শুরু হওয়া অস্থিরতায় এথেন্স রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
ধর্মঘটকারীরা গ্রিসের বিভিন্ন শহর ও নগরে সমাবেশ করেন এবং সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। সেই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার জন্য নৌ, ট্রেন ও আকাশ যোগাযোগও বন্ধ রাখা হয়।
দুই বছর আগে গ্রিসের টেম্পি গিরিখাতের কাছে শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ৫৭ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ইদ্রিস আলী (৩৪) নামের এক বাংলাদেশিও ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। দূতাবাসের সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি গ্রিক সরকার নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছে।
আরও পড়ুন
সিএনএন জানিয়েছে, দুই বছর পরও দুর্ঘটনার কারণে নিরাপত্তার যে ঘাটতি তৈরি হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি বলে এক তদন্তে উঠে এসেছে। একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় তদন্ত এখনো অসমাপ্ত রয়েছে এবং দুর্ঘটনায় কাউকে দোষীও সাব্যস্ত করা হয়নি।
দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার, নাবিক, ট্রেনচালক, ডাক্তার, আইনজীবী এবং শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার লোকেরা ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় সমস্ত আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। সেই সঙ্গে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এবং থিয়েটারগুলো তাদের অনুষ্ঠান বাতিল করে।
শুক্রবার ভোর থেকেই হাজার হাজার মানুষ এথেন্সের কেন্দ্রস্থলে সিনতাগমা স্কয়ারে জড়ো হন। তারা পার্লামেন্ট ভবনের পাশে আগুন জ্বালান। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘খুনিদের সরকার’।
প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিসের মধ্য-ডানপন্থী সরকার ২০২৩ সালে দুর্ঘটনার পরে পুনরায় নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার বিষয়ে সংসদীয় তদন্ত শুরু করতে ব্যর্থতার জন্য বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে তার সরকার। যদিও সরকার এসব অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, দুর্ঘটনার তদন্ত বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে।
এমজে