১৫ লাখ প্রবাসীর তথ্য চুরি, ইএসকেএলের কার্যক্রম চিরতরে বন্ধের দাবি

প্রবাসীদের তথ্য পাচার, হয়রানি নির্যাতন ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসকেএলের কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ মালয়েশিয়া শাখা। একই সঙ্গে ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর ও পররাষ্ট্র সচিব জসীমউদ্দীনের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, শেখ পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালয়েশিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসকেএল প্রবাসীদের তথ্য পাচার করে জালিয়াতি করছে। এ ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। দৈনিক আমার দেশের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, লাখ লাখ মালয়েশিয়া প্রবাসীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। কিন্তু তাবিথ আওয়াল প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়েছে।
আরও পড়ুন
মালয়েশিয়া প্রবাসী আল মামুন আরও বলেন, নতুন করে আবার ১৫ লাখ মালয়েশিয়া প্রবাসীর ব্যক্তিগত তথ্য পাচারে জড়িত কোম্পানিটিকে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শেখ পরিবারের জালিয়াতি ব্যবসা রক্ষার নতুন কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমার দেশের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ ছিল— একজন রহস্যময় আমেরিকান নাগরিক এই কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত। কোম্পানিটির মালিকানায় তাবিথ আওয়াল, শেখ পরিবারের লোকজন, নুরে আমল, নিক্সন চৌধুরী, শেখ রেহেনা রয়েছেন। এ ছাড়া, আমাদের তথ্য অনুযায়ী— হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর, পররাষ্ট্র সচিব জসীমউদ্দীন ও গিয়াস উদ্দিন এই দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
ইএসকেএলের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধের দাবি জানিয়ে এ প্রবাসী বলেন, অভিযুক্তদের অবিলম্বে প্রত্যাহার ও তদন্তের আওতায় আনা হোক। পাসপোর্ট সেবা একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় এবং আমরা চাই অন্যান্য সব দেশের মতো শুধুমাত্র বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সরাসরি প্রদান করা হোক, কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই। প্রয়োজনে হাইকমিশনে জনবল বাড়িয়ে সেবার মান উন্নত করতে আমরা অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ দিতে প্রস্তুত, কিন্তু আমাদের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় বেশকিছু দাবিও তুলে ধরেন তিনি—
১. ইএসকেএলের কার্যক্রম অবিলম্বে চিরতরে বন্ধ করা হোক।
২. তাবিথ আওয়াল, খোরশেদ আলম খাস্তগীর, জসীমউদ্দীন ও গিয়াস উদ্দিনসহ জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩. মালয়েশিয়া হাইকমিশনের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও নিরাপদ পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. মালয়েশিয়া হাইকমিশনে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করে সেবার মান বাড়ানো হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় মানব পাচার প্রতিরোধ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দীন শিহাব, কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন সহ-সম্পাদক লিমন খান, কেন্দ্রীয় গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিষয়ক সহ-সম্পাদক মো. ইমরান, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ কুয়ালালামপুর মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ খান প্রমুখ।
এমজে