তুরস্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাস আঙ্কারার আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে তিনটি পর্বে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫’ পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার পাঠানো বাণী পাঠের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করা হয়। এরপর ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ‘ইউজে ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে’ অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করে এবং একটি শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। পরে ইউজে স্কুল অডিটোরিয়ামে একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
আরও পড়ুন
আলোচনা অনুষ্ঠানে শতাধিক শিক্ষার্থীর সামনে রাষ্ট্রদূত এবং স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ভাষা শহীদদের ও ভাষা আন্দোলনের সৈনিকদের।
তিনি বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। ভাষা শহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছি। তিনি শোকের ও গৌরবের এ দিনটিকে জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অসামান্য অর্জন হিসেবে তুলে ধরেন।
পরে ইউক্রেন, আজারবাইজান, ক্রোয়েশিয়া, মরিশাস, কম্বোডিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব, কিরগিজিস্তান, ইতালি, ঘানাসহ ১৫টি দেশের প্রতিনিধি তাদের নিজ নিজ ভাষায় নাচ, গান ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে কূটনৈতিক কোর-এর পক্ষ থেকে কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণ এবং ‘বিজয় ৭১ মিলনায়তনে’ অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, প্রবাসী বাংলাদেশি, বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ব্যক্তিবর্গ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের অংশগ্রহণে একটি শোভাযাত্রা শেষে দূতাবাস প্রাঙ্গণের স্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেকুর রহমান এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিনিধিরা।
এসময় ভাষা আন্দোলন ও জুলাই বিপ্লবের ওপর আঁকা চিত্রাঙ্কন এবং বাংলাদেশি বিভিন্ন পিঠা প্রদর্শনী করা হয়। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী এবং একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অতিথিদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এসএসএইচ