বৈধতা নিয়ে সংশয় কাটছে না মালয়েশিয়া প্রবাসীদের
করোনা সংক্রমণ ঠেকানো এবং সংকট উত্তরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কাজ করছে মালয়েশিয়া সরকার। একদিকে দেশটিতে কর্মরত অভিবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য-চিকিৎসা, বাসস্থান ও কর্মঘণ্টা শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মান নির্ণয়ে ক্রমেই বদলাচ্ছে মালয়েশিয়ার অভিবাসন নীতি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের কারণে ক্রমেই ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াও জটিল হচ্ছে। এ জটিলতার ফলে বৈধতা নিয়ে সংশয় কাটছে না মালয়েশিয়া প্রবাসীদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে রিহায়ারিং প্রোগ্রামে তিনটি ভেন্ডরের মাধ্যমে যারা বৈধতা নিয়েছিলেন তারা ৬ নম্বর স্টিকার (ভিসা) পাচ্ছেন না। ভিসার আবেদন করার পর অভিবাসন বিভাগ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কী কারণে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ বলা হচ্ছে না।
এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন রিহায়ারিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে বৈধতা পাওয়া প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি কর্মী। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান না করলে ফিরে যেতে হবে দেশে। তাই এর সুষ্ঠু সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার দাবি তুলেছেন প্রবাসীরা।
এদিকে ২০১১ সালের ৬ পি, ২০১৬ সালের রিহায়ারিং ও ২০১৮ সালের ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির পর শ্রমিক সংকট উত্তরণে গত বছরের ১৬ নভেম্বর ঘোষণা করা হয় রিক্যালিব্রেশন নামে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া। শুরুতে এ প্রক্রিয়ায় কোনো দালাল বা ভেন্ডর ছাড়া কোম্পানির মালিক পক্ষের মাধ্যমে থ্রি-ডি নির্মাণ, উৎপাদন, চাষ ও কৃষি খাতে সোর্স কান্ট্রি বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের অবৈধ বিদেশি কর্মীদের বৈধতার ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে গত ২২ এপ্রিল দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সার্ভিস সেক্টরেও বৈধ হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
চলমান রিক্যালিব্রেসি প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন ও সফল করতে নিয়োগ কর্তার পাশাপাশি বেসরকারি কর্মসংস্থান সংস্থা আইন ১৯৮১ (আইন ২৪৬) এর অধীনে লাইসেন্স প্রাপ্ত বেসরকারি কর্মসংস্থান এজেন্সিগুলোকে (এপিএস) সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় গত মাসের ২২ এপ্রিল পর্যন্ত এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৩০ জন অভিবাসী কর্মী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৩ হাজার ৫০৬ জন বৈধতা পেতে নিবন্ধন করেছেন। ৭২ হাজার ৩২৪ জন অভিবাসী তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ প্রক্রিয়া চলবে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত।
যেসব কর্মী ২০১১ সালে ৬ পি ও ২০১৬ সালে রিহায়ারিং প্রোগ্রামে নাম নিবন্ধন করেও বৈধ হতে পারেননি তারা এ প্রক্রিয়ায় বৈধতা নিতে নিবন্ধিত হতে পারবেন। এছাড়া যেসব কর্মী তাদের কোম্পানি থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে যদি অভিবাসন বিভাগে কোম্পানির কোনো অভিযোগ না থাকে তাহলে তারাও বৈধ হতে পারবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জয়নুদিন ২২ এপ্রিল বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের এমনটিই জানিয়েছেন।
ওএফ/জেএস