কুয়েতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কূটনৈতিকদের সংবর্ধনা দিয়েছে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) হোটেল মিলেনিয়ামের আল-তাজ বলরুমে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাকিবুল করিম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
তিনি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য গেস্ট অব অনার মেজর জেনারেল আহমাদ রাশেদ আল-শানফাকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও তিনি সম্মানিত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং তাদের কাছে তুলে ধরেন ২১ নভেম্বর ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ শুধু বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের কাছেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দিবসটি সম্মিলিতভাবে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য সহযোদ্ধাদের পারস্পরিক আস্থা, ঐক্য এবং সশস্ত্র বাহিনীর সমন্বিত যৌথ কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব সম্পর্কিত বিশেষ বার্তাবহন করে।
তিনি বলেন, এ বিশেষ দিবসে আমরা আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। দিবসটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বস্তরের সদস্যদের আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তাদের দীপ্ত শপথকে নবায়ন করতে উদ্বুদ্ধ করে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পেশাগত উন্নয়নের বিষয়ে আলোকপাত করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাকিব উল্লেখ করেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ এর আওতায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘের ব্যানারে সর্বাধিক সৈন্য প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে বাংলাদেশ গর্বের সঙ্গে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। এ ছাড়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সামরিক কন্টিনজেন্ট ১৯৯১ সাল থেকে কুয়েতে মোতায়েন রয়েছে এবং কুয়েতের গঠনমূলক ও উন্নয়নমূলক কাজে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার মাধ্যমে কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করে যাচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাকিবুল করিম চৌধুরী আরও উল্লেখ করেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় গৌরব, বিশ্বস্ততা ও আস্থার প্রতীক। জাতি গঠন কার্যক্রম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করে।
কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন বলেন, কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের বন্ধন অবিচ্ছেদ্য এবং ঐতিহাসিকভাবে যুক্ত। বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে ও মনে কুয়েতের জন্য একটি বিশেষ স্থান রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক এবং কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য কুয়েতের আমির শেখ মিশাল আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ এবং তার সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর সৈনিক এবং সাধারণ জনগণের সীমাহীন আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান ব্যক্ত করেন। এছাড়াও তিনি কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার মেজর জেনারেল আহমাদ রাশেদ আল-শানফা কুয়েতে বাংলাদেশের সামরিক কন্টিনজেন্টের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র-বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করেন। কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী দীর্ঘজীবী হোক এ কামনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর ন্যাশনাল মিলিটারি সার্ভিসের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল আহমাদ রাশেদ আল-শানফা গেস্ট অব অনার এবং কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কুয়েতের কূটনৈতিক কোর ও সিভিল সোসাইটির সদস্য, কুয়েতে নিবাসী বিভিন্ন দেশের ডিফেন্স অ্যাটাশে, কুয়েতে নিয়োজিত বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্টের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এমএন