মালয়েশিয়ায় ১৭ বছর, তবুও মরদেহ দেশে এলো প্রবাসীদের চাঁদার টাকায়
পরিবারের সচ্ছলতার আশায় ২০০৭ সালের কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া পাড়ি জমান আবদুল হান্নান (৪৪) নামের এক বাংলাদেশি। কিন্তু জীবন থেকে ১৭ বছর হারিয়ে গেলেও তিনি জীবদ্দশায় সচ্ছলতার মুখ দেখেননি।
দীর্ঘ ২৫ দিন রোগ ভোগের পর গত ১৫ নভেম্বর চৌকিটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর নতুন জটিলতায় পড়েন স্বজনরা। হাসপাতালের চিকিৎসা বিল ও মরদেহ দেশে পাঠাতো প্রয়োজন ছিল ১২ হাজার রিঙ্গিত বা প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এত অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না।
হান্নানের বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকায় শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির মালিক সব ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও নিয়োগকর্তা সেটি বহন করেননি। তাই বিপাকে পড়ে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত মৃত হান্নানের ছোট ভাই মো. পেল্টু মিয়া কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান। তবে তাতে কাউন্টারের দায়িত্ব থাকা কর্মীরা কোনো সাড়া দেননি। পরে প্রবাসীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ১২ হাজার রিঙ্গিত সাহায্য তুলে আবদুল হান্নানের মরদেহ সোমবার (২৫ নভেম্বর) দেশে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
আবদুল হান্নান দীর্ঘদিন ফুসফুসের ইনফেকশন ও রক্তচাপজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। এ কারণে তিনি নিয়মিত কাজ করতে পারতেন না। আবদুল হান্নান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সিন্দুরিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে সন্তানটি শারীরিক প্রতিবন্ধী।
এদিকে দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, আবদুল হান্নান নামের মৃত ব্যক্তির কোনো স্বজন দূতাবাসের লেবার উইংয়ে যোগাযোগ করেনি। সঠিক ভাবে লেবার উইংয়ে যোগাযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হতো।
অন্যদিকে দূতাবাসের কাউন্টারে থাকা কোন কর্মীর সঙ্গে মৃত আবদুল হান্নানের ছোট ভাই মো. পেল্টু মিয়া সাক্ষাৎ করেছেন সেটি তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের প্রথম সচিব সুমন চন্দ্র দাস বলেন, বৈধ প্রবাসী মারা গেলে কোম্পানির মালিকের সম্পূর্ণ খরচে মরদেহ দেশে পাঠানো হয়। আর যদি অবৈধ প্রবাসী মারা যান সেক্ষেত্রে পরিবারের সামর্থ্য না থাকলে দূতাবাসে আবেদন করলে বরাদ্দ অনুযায়ী মরদেহ দেশে পাঠানো হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আবদুল হান্নানের স্বজনরা নিয়মমাফিক দূতাবাসে আবেদন করলে দূতাবাস প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করত।
এসএসএইচ