কাগতিয়া শরীফে ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিলে নবীপ্রেমীদের স্রোত
মহান আল্লাহ তা’আলা মানবজাতিকে হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে বহু নবী-রাসুল (আ.) প্রেরণ করেছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ছৈয়্যদুল মুরছালিন মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের মাধ্যমে নবুয়তের পরিসমাপ্তি হয়। সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য রাহমাতুল্লিল আলামিন হয়ে তিনি ১২ রবিউল আউয়াল সুবহে সাদিকে ধরার বুকে তাশরিফ আনেন। মূর্তিপূজার অন্ধকার দূর করে দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করেন। নবীজি হলেন সুমহান চরিত্রের অধিকারী ও উত্তম আদর্শের শাশ্বত প্রতীক। নবীজির আনুগত্যের মাঝেই নিহিত রয়েছে আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য। আর রাসুলুল্লাহ (দ.) এর আনুগত্য হলো তার আদর্শের অনুকরণ ও সুন্নাতের অনুশীলন করা। প্রিয় রাসুল (দ.)-কে নিজের জীবনের চেয়েও অধিক মুহাব্বত করতে না পারলে কেউ ঈমানের পূর্ণতার স্তরে পৌঁছাতে পারে না।
নবীপ্রেমে অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন কাল শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তি খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.)। মানুষকে মহান আল্লাহ ও প্রিয় রাসুলের পথে পরিচালিত করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ তরিকৃত। যে তরিক্বতে রয়েছে সিনা-ব-সিনা তাওয়াজ্জুহ প্রদানের মাধ্যমে হুজুর পাক (দ.) এর বাতেনি নূর বিতরণ, ফয়েজে কুরআনের মাধ্যমে পবিত্র কুরআনের নূর গ্রহণের সুযোগ, ফাতেহা শরীফ আদায় করে প্রতিদিন মিলাদুন্নবী (দ.) পালন, নবীজির মুহাব্বত নিয়ে প্রতিদিন ১১১১ বার দরূদ শরীফ পাঠ সহ সুন্নাতে মোস্তফার বাস্তবায়ন ও মোরাকাবার অনুশীলন। এ তরিক্বতে নেই শরিয়তের বিন্দুমাত্র লঙ্ঘন, নেই কোনো শিরক বিদ’আতের প্রচলন। সম্পূর্ণ খুলুছিয়ত ও লিল্লাহিয়তের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সাজানো এই তরিক্বতের অনুশীলনের মাধ্যমে মানুষ পৌঁছে যায় মনজিলে মাকছুদে, রাসুলে পাক (দ.) এর অকৃত্রিম মুহাব্বত অর্জনের মাধ্যমে পায় ঈমানের পরিপূর্ণতা।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর থেকে পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের রাউজান কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের ৭১তম পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) শীর্ষক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য এবং সংগঠনের মহাসচিব প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন নূরী, মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানি ফয়সাল প্রমুখ।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিল উপলক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাদে জোহর খতমে কোরআনে করিম ও পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) শীর্ষক আলোচনা, বাদে আছর- খতমে শেফা, বাদে মাগরিব- মোরাকাবা ও জিকিরে গাউছুল আজম মোর্শেদী।
উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষ্যে ২৪৫০টি খতমে কোরআন, ২২৭টি তাহলিল, ৭০টি খতমে ইউনূচ ও ২৮টি দরূদে সাইফুল্লাহ আদায় করা হয়।
মিলাদ কিয়াম শেষে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এসএসএইচ