টরন্টোতে কণ্ঠশিল্পী লিলির একক সংগীতায়োজন
কানাডার টরন্টোতে হোপ ইউনাইটেড চার্চে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘আলোকে উজ্জ্বল জীবনে চঞ্চল আনন্দ গান গা রে হৃদয়’ শীর্ষক কণ্ঠশিল্পী লিলি ইসলামের একক রবীন্দ্রনাথের গানের সন্ধ্যা। সঙ্গে সংগীত এবং আবৃত্তি পরিবেশন করেন অন্যস্বর টরন্টো এবং অন্যথিয়েটারের শিল্পীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের প্রথমভাগে ছিল অন্যস্বরের শিল্পীদের সংগীত পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে আসিফ চৌধুরী বিশ্বকবির ১৯১২ সালে শিলাইদহে বসে দাদরা তালের এবং পিলু রাগের লেখা ‘কোলাহল তো বারণ হলো’ পূজা পর্যায়ের গানটি পরিবেশনা করেন। মৈত্রেয়ী দেবী পরিবেশন করেন রাগ কীর্তন, দাদরা তালের আমি তখন ছিলাম মগন গহন ঘুমের ঘোরে যখন বৃষ্টি নামলো গানটির রচনাকাল ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দ। ফারজানা বেবী কবির শান্তিনিকেতনে ১৯১৪ সালে লেখা বেহাগ রাগের, তেওড়া তালের ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’ এই গানটি পরিবেশন করেন।
রিক্তা মজুমদার প্রেম পর্যায়ের দাদরা তাল, বিভাস রাগের ‘হৃদয়ের একুল ওকুল দুকূল ভেসে যায়’ গানটি পরিবেশন করেন। গানটির রচনাকাল ১৮৯৩। কণ্ঠশিল্পী মেহজাবিন বিনতে ওসমান পরিবেশন করেন আড় খেমটা তালের এবং পিলু কারাংরা পরজ কীর্তন রাগের ‘আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে’। শিরিন চৌধুরী পরিবেশন করেন খ্যামটা তালের, কাফি রাগের ‘মম চিত্তে নিতি নৃত্যে’। গানটির রচনাকাল ১৯১০। রনি মজুমদার পরিবেশন করেন প্রকৃতি পর্যায়ের কালাংরা ভৈরবী রাগের, কাহারবা রাগের ‘আমার যেদিন ভেসে গেছে’। গানটির রচনাকাল ১৯৩৭।
কণ্ঠশিল্পী ফারহানা শান্তা পরিবেশন করেন রাগ-কীর্তন এবং তেওড়া তালে ‘খাঁচার পাখি ছিল সোনার খাঁচাটিতে’। গানটি কবিগুরু শাহজাদপুরে বসে ১৮৯২ সালে লিখেন।
অন্যস্বর টরন্টোর শিল্পীদের সংগীতের পর ২০ মিনিটের বিরতির পর সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী লিলি ইসলাম। প্রচলিত অপ্রচলিত মিলিয়ে তিনি বেশকিছু রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন তিনি। প্রতিটি গানই দারুণ উপভোগ্য ছিল। সঙ্গে বাড়তি পাওনা ছিল, ছোট ছোট করে তার অভিজ্ঞতা, স্মৃতি থেকে কিছু কথা জুড়ে দেওয়া। দর্শক শ্রোতারা দারুণভাবে উপভোগ করেছেন কথার মাঝে সংগীত পরিবেশনা।
কি-বোর্ডে ছিলেন বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক জাহিদ হোসেন, তবলায় রনি পালমার, মন্দিরায় জনি ফ্রান্সিস গোমেজ। উপস্থাপনায় ছিলেন আহমেদ হোসেন এবং মুনিমা শারমিন। শব্দ নিয়ন্ত্রণ করেছেন মামুনুর রশীদ।
যথারীতি সময়মতো অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথম পর্বের অন্যস্বরের কন্ঠশিল্পীদের সংগীতের পর পর আবৃত্তিকারবৃন্দ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দুঃসময়’ কবিতাটির নিরীক্ষাধর্মী আঙ্গিকে উপস্থাপন করেন যা দর্শক শ্রোতাদের করেছে মুগ্ধ। আবৃত্তি করেছেন মুনিমা শারমিন, আহমেদ হোসেন, দিলারা নাহার বাবু, ফারিয়া শারমিন সেহেলি, ফারিহা রহমান, নার্গিস রুপক। যথারীতি প্রতিটি অনুষ্ঠানের মতো মঞ্চ সজ্জাও ছিল দৃষ্টি নন্দন। নান্দনিক স্টেজটি তৈরি করেছেন বদরুদ্দোজা সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন মঈন হোসেন ময়না, নার্গিস রুপক, মুনির বাবুসহ অনেকে। সব মিলিয়ে এটি ছিল অন্যস্বর টরন্টো এবং অন্য থিয়েটার টরন্টোর আরও একটি সফল আয়োজন।
এমএ