তুরস্কে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত
বাংলাদেশ দূতাবাস আংকারায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে বাংলাদেশের নিরীহ, নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত মানুষের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরোচিত গণহত্যাকে স্মরণ করে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
২৫শে মার্চের কালো রাতে নিহত নিরস্ত্র বাঙালি ও মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দূতাবাসের কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করে শোনান।
এরপর গণহত্যা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা পর্বে প্রথমেই বক্তব্য দেন করেন দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান।
প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংগঠন লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারস-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন
এরপর বক্তব্য দেন কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস আবুল কালাম আজাদ, তিনি বর্তমানে ওই দূতাবাসে অডিট করার উদ্দেশে আঙ্কারাতে অবস্থান করছেন।
আলোচনায় রাষ্ট্রদূত আমানুল হক তার বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সব শহীদ সদস্যদের এবং ২৫শে মার্চের কালরাতে নিহত নিরস্ত্র বাঙালিসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরিচালিত অপারেশন সার্চ লাইটকে পৃথিবীর জঘন্যতম এবং ইতিহাসে বিরল হত্যাযজ্ঞ হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।
তিনি আলোচনায় বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার বিষয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়াও প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণের পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার যাত্রায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব বাংলাদেশিকে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
শেষে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কালরাত্রিতে নিহতদের ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়।
এসএসএইচ