সুদানে ৫০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত
আফ্রিকার দেশ সুদানে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের জেরে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি ও আধা-সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান ডাগলোর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে শুরু হওয়া লড়াইয়ে বিপর্যস্ত সুদান। এ সংঘর্ষ শুরুর আগেও দেশটির অনেক মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছিলেন।
আইওএম জানিয়েছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর অন্তত ১১ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদের মধ্যে সাত লাখ ৫০ হাজার মানুষ মিশর বা চাদে গিয়েছেন বলেও জানিয়েছে আইওএম।
সংঘর্ষ থামিয়ে শান্তি ফেরাতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। অন্তত নয়টি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও সবগুলো ভেস্তে গেছে। চলমান এ সংঘাত সহসা থামার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।
দুই পক্ষের সংঘাতে সুদানের রাজধানী খার্তুম যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কোনো পক্ষই সেখানে একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এদিকে, পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে চলমান সংঘাত রূপ নিয়েছে জাতিগত সহিংসতায়। অধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের তথ্য মতে, আরএসএফ এবং তাদের মিত্র আরব মিলিশিয়ারা নৃতাত্ত্বিক আফ্রিকানদের আক্রমণ করছে।
জুনের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় সৌদি শহর জেদ্দায় দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনা হয়। আরএসএফ ও সেনাবাহিনীকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় দুই মধ্যস্থতাকারী।
নিজ দলের নেতা মোহাম্মদ হামদান ডাগলোর বিরুদ্ধে ক্ষমতায় টিকে থাকতে লড়াই করছেন সুদানের ডি ফ্যাক্টো প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। আর মোহাম্মদ হামদান ডাগলোর সঙ্গে আছে আধা সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। এই দুই জেনারেল যৌথ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদান দখল করেছিলেন।
দুই জনের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব গত ১৫ এপ্রিল থেকে প্রকাশ্য যুদ্ধে রূপ নেয়। আর এই যুদ্ধে চার কোটি ৬০ লাখ মানুষের দেশটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস
/এসএসএইচ/