মিশিগানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় রোববার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় হ্যামটামিক শহরের কাবাব হাউজে এ ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউজ করেসপন্ডেট মুশফিকুল ফজল আনসারীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউজ করেসপন্ডেট এবং জাস্ট নিউজ সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারীর মিশিগান আগমন উপলক্ষে বাংলা প্রেস ক্লাবের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ক্লাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতারা অনুষ্ঠানে আসেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ সাহেদুল হক। সঞ্চালনায় করেন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানে মুশফিকুল ফজল আনসারীর বেশিরভাগ বক্তব্য ছিল সরকারবিরোধী। বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে হেয় করেও তিনি বক্তব্যে রাখছিলেন। এক পর্যায়ে মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক আহমেদ চান এক তরফা বক্তব্যে বন্ধ করার জন্য দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা তার ওপর উত্তেজিত হয়ে উঠেন। বিএনপির সহ সভাপতি সমজিত আলমসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের দিকে তেড়ে যান এবং অনুষ্ঠান থেকে চলে যেতে ধাক্কাধাক্কি করেন।
এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুলেমান খান বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। মুশফিকুল আনসারীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন জাসদ ছাত্রলীগের এককালের তুখোড় নেতা আমিনুর রশীদ চৌধুরী। প্রতিবাদ করার কারণে তার সঙ্গেও বিএনপি নেতাকর্মীরা বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের তিন জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। হট্টগোলের আগমুহূর্তে অনুষ্ঠান থেকে চলে যান স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ফয়সল চৌধুরী।
প্রেস ক্লাব সভাপতি সাহেদুল হক, জালালাবাদ সোসাইটির সভাপতি এন ইসলাম শামীম, বিএনপি সভাপতি আকমল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ, লিটু চৌধুরী, বিয়ানিবাজার সমিতির সভাপতি আজমল হোসেনসহ আরও বেশ কয়েকজন পরিস্থিতি শান্ত করেন।
প্রেস ক্লাব সভাপতি সৈয়দ সাহেদুল হক তার বক্তব্যে বলেন, প্রেসক্লাব সবার সংগঠন। দল নিরপেক্ষ সংগঠন। আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবং যদি কোনো কথাবার্তায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রেসক্লাবের প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই বিদেশের মাটিতে সাংবাদিকতা করেন। আমরা সবাই সুন্দর বাংলাদেশ চাই।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগ ও মিশিগান মহানগর আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈঠকে বসেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
মুশফিকুল ফজল আনসারী তারে বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সবকিছুর মধ্যে শঙ্কা। তারা মানুষের অধিকারের কথা বলে অথচ স্বাধীন ভোটের আয়োজন করতে পারে না। নির্বিচারে মানুষকে মেরে ফেলছে। বাংলাদেশের অনেক পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দিনের পর দিন বাড়িতে থাকতে পারছে না। কিংবা কারাগারে থাকতে হচ্ছে। অনেককে গুম করে ফেলা হয়েছে। সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি যদি সমস্যায় পড়ে তখন পুরো পরিবার সমস্যায় আক্রান্ত হয়।
তিনি বলেন, ১২ টন অস্ত্র নিয়ে একটি বিমান ভূপাতিত হওয়া এবং একই সময়ে ৮ জন ক্রু নিহত হয়ে যাওয়ার এই নিউজটি নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়াতে তেমন কোনো খবর নেই। কোট করছে ডেইলি মেইল ও বিবিসিকে। অথচ এটি চাইলেই নিজস্ব সংবাদ মাধ্যমে নিউজটি দিতে পারত।
মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও বলেন, আইএসপিআর একটা বিবৃত্তি দিয়ে বলছে, এটার মধ্যে মোটর ছিল। বিধ্বস্ত কোনো অস্ত্র ছিল না। আবার পররাষ্ট্র সচিব বলছেন, এটায় বিধ্বস্ত অস্ত্র ছিল। আমাদের ইন্স্যুরেন্স করা আছে। আইএসপির একটা বলছে। সচিব আরেকটা বলছেন। রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা না থাকলে যা হয়। এটিকে ছেলেখেলা মনে করবেন না। এই দৌড় কত দূর যায়, এখানে মাত্র শুরু। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক পলিটিক্স চলছে।
এসএসএইচ