আমলাতন্ত্রের ক্ষমতা হ্রাস করতে হবে : আকবর আলি খান
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেছেন, আমলাতন্ত্রের ক্ষমতা হ্রাস করতে হবে। বর্তমানে সরকার এবং আমলা এক হয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা তারা সব একত্রে কাজ করে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলেও তারা একা কিছু করতে পারবে না।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বর্তমান জাতীয় সংকট এবং সমাধানে নাগরিক ভাবনা' শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
আকবর আলি খান বলেন, বলা হচ্ছে সার্চ কমিটি দিয়ে নির্বাচনী সমস্যা সমাধান করা যাবে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের সব নেতৃবৃন্দ সার্চ কমিটিতে আছেন। আমার সার্চ কমিটির ওপর কোনো আস্থা নেই। এর কারণ হচ্ছে, তারা সবাই দল করেন। আর যদি দলও না করেন তাহলেও কোনো কাজ হবে না। কারণ বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো নিরপেক্ষ লোক নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো কমিশন আদৌ কোনো কাজ করে না। সার্চ কমিটিও কোনো কাজ করে না। আমাদের দেশের সিস্টেম যুক্তরাষ্ট্রের মতো করতে হবে। আর সেটা করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। আমাদের সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং আমলাতন্ত্রকে সরকারের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করতে হবে। এটা করতে পারলে সরকার এবং আমলাতন্ত্র উভয়েই লাভবান হবে। তবে এ ধরনের সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়।
আকবর আলি খান বলেন, তিনটা, চারটা কিংবা পাঁচটা লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন সুষ্ঠু করা কখনই সম্ভব নয়। কারণ প্রত্যেকটা নির্বাচনে আইন অনুযায়ী ক্ষমতা দেওয়া থাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসারকে। সুতরাং রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই কমিশনের। শুধু নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করলে হবে না, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসারদেরও শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের কথা মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমে সুশীল ব্যক্তিদের থেকে নিরপেক্ষ পাঁচজনকে বের করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলো। এটা হলেও তারা কিছু করতে পারবে না। সুতরাং এ পদ্ধতিতে কীভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে? সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সরকারের আমলাতন্ত্রের ওপর যে ক্ষমতা আছে তা হ্রাস করতে হবে। বর্তমানের সরকার এবং আমলাতন্ত্র এক হয়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তা এরা সব একত্রে কাজ করে। সেখানে একা এ নির্বাচন কমিশন কিছু করতে পারবে না।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুলসহ সংশ্লিষ্টরা।
এসআর/এসকেডি