হেফাজত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি মুহিব্বুল্লাহর
বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হেফাজত নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা, ছাত্র ও সাধারণ মুসুল্লিদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে হেফাজতের আমির বলেন, আলেমরা কোনো অন্যায় অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। তারা মাদরাসায় কুরআন-হাদিসের পাঠদানে মগ্ন থাকেন। মানুষের ঈমান-আকিদা বিশুদ্ধ করণে ওয়াজ-নসিহত করেন। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সর্বসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল প্রকার অরাজকতা থেকে মানুষকে বিরত রেখে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেন। কিন্তু ডজন-ডজন মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে। এমন আচরণ ইসলাম ও দেশের জন্য খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, আমরা নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, গ্রেপ্তারকৃতদের থানা হেফাজতে শারীরিক ও মানসিকভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। যার ফলে বন্দিদের মধ্যে অনেকের পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। আলেম-উলামা, ছাত্র ও সাধারণ মুসুল্লিদের জন্য পরিবারকে কোনো খাবার সরবরাহ করতেও দেওয়া হচ্ছে না। এ তীব্র শীতেও তাদের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র রাখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কারা আইনে একজন বন্দি সপ্তাহে একবার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার এবং সাক্ষাৎ লাভের অধিকার রাখে। কিন্তু তারা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত। আবার অনেককেই সেলে রেখে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আলেমদের মধ্যে অনেকেই বয়োবৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা এবং ওষুধ সেবনেও বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বন্দিদের সঙ্গে এমন নির্মম আচরণ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি সরকার প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমার ধারণা প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু নাস্তিক এজেন্টরা সরকার এবং হেফাজতের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি এবং দূরত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের হীন স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা দেশের জনপ্রিয় আলেম নেতাদের আটকে রেখে তৌহিদী জনতার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে দেশে গণবিস্ফোরণ ঘটাতে চায়।
বাবুনগরী বলেন, হেফাজত ইসলাম দেশে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা চায়না। যার কারণে প্রায় এক বছর ধরে রাজপথে কোনো কর্মসূচি না দিয়ে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তবে তৌহিদী জনতার পুঞ্জিভূত ক্ষোভ গণবিস্ফোরণের রূপ নিলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের থাবায় জনজীবন বিপর্যস্ত। কারাবন্দি আলেম ওলামা ও মুসল্লিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিয়ে দেশের মসজিদ-মাদরাসা খানকায় পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ দিন। অনতিবিলম্বে নায়েবে আলেম-উলামাদের দ্রুত মুক্তি দিন।
কেএম/আইএসএইচ