এ মুহূর্তেই আমাদের রাস্তায় নামতে হবে : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা বলি তার (খালেদা জিয়া) যদি কিছু হয়, তাহলে এ সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। তার কিছু হওয়া পর্যন্ত কেন আমরা অপেক্ষা করবো?, তার কিছু হবে কেন? কিছু হওয়ার আগেই এ মুহূর্তেই আমাদের রাস্তায় নামতে হবে।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের মা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতীক যে মানুষটি তিনি আজ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বন্দিদশায় রয়েছেন। যাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই, জনগণের সমর্থন নেই, ভোট-নির্বাচনকে একেবারে নির্বাসনে পাঠিয়ে শুধুমাত্র এক প্রতিহিংসা পূরণের জন্য দেশনেত্রীকে বন্দি করে রেখেছে। মানুষ হিসেবে চিকিৎসার যে মৌলিক অধিকার সেটিও এই সরকার হরণ করেছে। তাকে তিলে তিলে শেষ করে দিয়ে দেশটাকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে শাসন করতে চায় এ সরকার।
আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য হচ্ছে অগণতান্ত্রিকতার ইতিহাস উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এই পার্থক্য বুঝেই জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। দেশের মানুষ বাঁচল, কি মরল এ বিষয়ে শেখ হাসিনার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তাদের শুধু ক্ষমতা চাই। ক্ষমতার জন্য এমন কোনো কাজ নেই, যা তারা করতে পারেন না।
র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা সংস্থা র্যাব এবং তার ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে। এই নিষিদ্ধ ঘোষণাতেও তাদের কি কোনো বোধহয় হয়েছে? তারা ওই একই কাজ করেই যাচ্ছে। গতকাল গভীর রাতে মুন্সীগঞ্জ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে গেছে। পরে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা তুলে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। গুম হচ্ছে আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য, ভালো কোনো বৈশিষ্ট্য নেই তাদের।
আলোচনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আজকের যে আন্দোলন, এ আন্দোলনের যে কৌশল, এই কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। এই স্বৈরাচারী সরকারের রূপটা ফ্যাসিবাদী সরকারে হয়ে গেছে। এই যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন, আর স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে যে এইটার একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। এই মৌলিক পার্থক্য অনুধাবন করে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রদান করতে না পারেন, তাহলে সেখানে আমরা সফলতা অর্জন করতে পারবো না।
বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শাসামসুজ্জামান দুদু বলেন, ইউনিভার্সিটিগুলো কোনো সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে আমাদের আর ডাকে না। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। গণতন্ত্র দেশ থেকে উঠে গেছে। ইউনিভার্সিটিগুলোতে আমাদের দলের কমিটি থাকলে কি হবে, তারা আজ কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, রুনেসার সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহার, সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবীর প্রমুখ।
এমএইচএন/এসএম