দেশকে পাকিস্তান বানানোই ছিল জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের লক্ষ্য
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় কোনো ব্যক্তিগত হত্যাকাণ্ড নয়, বাঙালিকে নেতৃত্বশূন্য করে স্বাধীন বাংলাদেশকে আবারও নব্য পাকিস্তানে রূপান্তর করাই ছিল স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকদের মূল লক্ষ্য।
জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে ১৯৭৫ সালে জাতীয় চার নেতার সাথে একই কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু জানান, ওই দিন রাত ২টা ২০ মিনিটে প্রথম ব্রাশফায়ারের শব্দ শুনতে পান। পরবর্তীতে ২০ মিনিট পর আবারও ব্রাশফায়ার। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর কাতরানোর শব্দ শুনে জাতীয় সকল নেতার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঘাতকরা আবারও ব্রাশফায়ার করে এবং বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। জেলের ভেতরে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্র যে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়, তারই ধারাবাহিকতায় ৩ নভেম্বর জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তার নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে জাতীয় চারনেতা যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন সেই অবদান কোনোদিন ভোলার নয়।
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যার পর বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার সমালোচনা করেন আমির হোসেন আমু।
গোলাম আজমকে রাজনীতির সুযোগ করে দেন জিয়াউর রহমান
১৪ দলের এই সমন্বয়ক ও মুখপাত্র বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে গলা টিপে হত্যা করে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনি ও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন, বিভিন্ন দূতাবাসে পদায়ন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে তার আসল চেহারা উন্মোচন করে। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব না থাকা সত্ত্বেও তাকে দেশে এনে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয় জিয়াউর রহমান।
আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে যারা নব্য পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল সেই শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল্যবোধকে আবার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার যোগ্য নেতৃত্বেই সকল সংকট উত্তরণ করে উন্নয়ন আর অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
ভিডিও বার্তায় জাতীয় চারনেতার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন তিনি।
এইউএ/এনএফ