শ্রমিকদের মজুরি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে : মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, যত থিউরিই বলেন কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে শ্রমিকের চাকরি চলে যাবে। ক্ষতিপূরণও যদি দেন, তবে সে স্থায়ীভাবে বেকার হয়ে যাবে। শ্রমিকের ওপর যে হামলা তা প্রমাণ করারও কোনো প্রয়োজন হয় না। এতদিন ধরে শুধু শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হলো বিষয়টা তা না। তারা যে কষ্ট করে সম্পত্তি তৈরি করল তার যে মজুরি, সে মজুরি থেকেও তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এ সরকার মুনাফেক সরকার, এ সরকার মিথ্যাবাদী সরকার। আমি সঙ্গে আমি এটাও বলতে চাই, এ সরকার প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সরকার। কোনো ভোটের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় আসেনি।
সোমবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ আয়োজিত বন্ধ হওয়া পাটকল রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু ও আধুনিকায়ন করার দাবিতে এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, কারখানায় উৎপাদন বন্ধ, শ্রমিকের বেতন বন্ধ। তাহলে করপোরেশনের ডিরেক্টর সাহেব কেন বেতন পান? আমাদের শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের কাজ কমে গেছে। তাহলে তাদের বেতনও সেই পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া উচিত।
সরকারের দাবি পাটকলে লোকসান হয়। এ দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, তাদের উদ্দেশ্য জনগণের সম্পত্তি কীভাবে কিছু ব্যক্তির হাতে তুলে দিতে পারে। আমরা প্রমাণ করে দেব পাটকল লাভজনক ছাড়াও সেখান থেকে প্রচুর সম্পত্তি আয় করে নতুন নতুন কলকারখানা করা সম্ভব। দেশ ৫০ বছর ধরে উল্টা পথে চলছে, যার কিছু নেই তার সম্পদ লুট করা হচ্ছে। দেশের সব মেহনতি মানুষকে আজ এক হতে হবে। এক হয়ে আবার নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের মতো লড়াই করতে হবে। একটা-দুইটা কলকারখানা নয়, পুরো দেশে মেহনতি মানুষের রাজত্ব কায়েম করে সেটা গরিব মানুষের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসবে।
সমাবেশে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, করোনাকালে নতুন করে ১৭ হাজার কোটিপতির জন্ম হয়েছে। তারমানে তারা শ্রমিকের পেটে কৃষকের পেটে লাথি মেরে কোটিপতি হয়েছে। রাষ্ট্রের হক চুরি করে তারা আজ বিদেশে টাকা পাঠায়। তারা আজ প্রমোদ ভ্রমণে যায়।
আগে শ্রমিকের দাম ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগে নির্বাচনে ভোটের দরকার ছিল, তখন শ্রমিকের দাম ছিল। এখন তো ভোটের দরকার নাই। এখন সরকার ভোটের আয়োজন করে কিন্তু ভোট দেওয়া লাগে না। তারমানে গরিব আরও গরিব হয়েছে এবং ধনী আরও ধনী হয়েছে। এ সরকারের কাছে দেশ নিরাপদ নয়। এ সরকারের কাছে কোনো জনপদ, দেশের মানুষ নিরাপদ নয়।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
এমএইচএন/এসএসএইচ